গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া – গায়েবী টাকা পাওয়ার উপায়

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভিজিটর। কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনি কি গায়েবী ধন পেতে চান?  গায়েবী টাকা পাওয়ার উপায় জানতে চান তাহলে আজকের এই পোষ্ট আপনার জন্য। আজকের আলোচনায় আমি কথা বলবো, গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া , গায়েবী টাকা পাওয়ার উপায়। গায়েবী রিজিকের দোয়া। আজকে আমি আপনাদের কে এমন কিছু দোয়া শিখিয়ে দেব। যেই দোয়া আমল করলে আপনার প্রতি আল্লাহ খুশি হয়ে আপনাকে গায়েবী ধন সম্পত দিতে পারেন।

গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া

গায়েবের মালিক হলেন একমাত্র আল্লাহ। আর তাই গায়েব থেকে কিছু পেতে আল্লাহর দুয়ারেই ধর্ণা দিতে হবে। তাকে ডাকতে হবে একমন চিন্তে। জয় করে নিতে হবে মহান প্রভুর মন। তাহলেই গায়েবী ধন পাওয়া যাবে। রহমতে ভরপর হবে আপনার ইহকালীন এবং পরকালীন জীবন।

গায়েবী ধন পাওয়ার জন্য বেশ কিছু রাসুলুল্লাহ সাঃ এবং যুগের ওলামায়ে কেরামগণ শিখিয়ে গেছেন আমাদের সেখান থেকেই দু একটি দোয়া আপনাদের জন্য তুলে ধরলাম

গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফে‘আন ওয়া রিয্‌কান তাইয়্যেবান ওয়া ‘আমালান মুতাক্বাব্বালান

গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক এবং এবং কবুলযোগ্য আমল প্রার্থনা করি।

গায়েবী টাকা পাওয়ার উপায়

কেউ যদি গায়েবী টাকা পেতে চায় তাহলে তার উচিত বেশী বেশি তওবা ইস্তেগফার করা। আস্তাগফিরুল্লাহ বেশী বেশি পড়া

গায়েবী রিজিক পাওয়ার দোয়া

اَللّٰهُمَّ اكْفِنِيْ بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِيْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাক ফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা ,ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক ।

See also  খাবারের আগে ও পরে যে দোয়া পড়তে হয়

যে ১৪ টি আমলে রিজিক বৃদ্ধির বৃদ্ধি হয়। রিজিক বৃদ্ধির আমল

সকল প্রশংসা আল্লাহর । তাঁর গুণগান গাওয়ার সাধ্য নাই আমার । অগণিত রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক বারবার , ঐ নবীর উপর, উম্মতের কল্যাণ চিন্তায় যিনি ছিলেন বেকারার । আমাদের জীবনের সকল সমস্যা দূর করার মালিক একমাত্র আল্লাহ।

ঐ আল্লাহর কাছে দোয়া করে সকল সমস্যা কিভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে আমার এই লেখা।দোয়া যে কত মহামূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তা বুঝার জন্য নীচে কিছু হাদিসের ভাবানুবাদ দেয়া হলোঃ

(১) যে বিপদ নাযিল হয়েছে এবং যে বিপদ এখনও নাযিল হয়নি অর্থাৎ আসেনি উভয়ক্ষেত্রেই দোয়া ফলদায়ক। সুতরাং আল্লাহর বান্দাগণ!তোমরা বেশী বেশী আল্লাহর কাছে দোয়া কর।

(২) তোমরা আল্লাহর নিকট তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ চাও । কেননা,আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ খুশী হন।আর বিপদ থেকে মুক্তির অপেক্ষা করা অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবাদত।

(৩) যে আল্লাহর কাছে চায় না ,আল্লাহ তার উপর রাগ করেন ।

(৪) যার জন্য দোয়ার দরজা খোলা হয়েছে , তাঁর জন্য রহমতের দরজাসমূহ খোলা হয়েছে এবং অন্য যেকোন কিছু চাওয়া থেকে আল্লাহর নিকট আফিয়াত চাওয়া তাঁর কাছে বেশী প্রিয় ।(আফিয়াত হলোঃ দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি ও নিরাপত্তা )

(৫)  তোমাদের রব লজ্জাশীল ও বড় দানশীল; বান্দা আল্লাহর কাছে দুই হাত উঠালে উহা খালি ফিরিয়ে দিতে আল্লাহ লজ্জাবোধ করেন।

(৬) দোয়া ছাড়া অন্য কিছু তকদীরকে ফিরাতে পারেনা এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কিছু আয়ু বাড়াতে পারেনা। আর নিশ্চয়ই মানুষ নিজের পাপাচারের কারনে রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।(এই হাদীসে তকদীর বলে শর্তযুক্ত তকদীর বুঝানো হয়েছে ,চূড়ান্ত ও অকাট্য তকদীর বুঝানো হয়নি। আল্লাহই সর্বাধিক অবগত।)

গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া আপনারা পড়ছেন

(৭) কোন গুণাহের কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দোয়া ছাড়া কোন মুসলমান আল্লাহর কাছে যে কোন দোয়া করুকনা কেন, আল্লাহ পাক তাকে তিনটি জিনিসের যেকোন একটি অবশ্যই দান করবেন। হয় যেটা চেয়েছে সেটাই দান করবেন অথবা উহা তার পরকালের জন্য জমা রাখবেন

See also  স্বপ্নে আয়াতুল কুরসি পড়লে কি হয় ?

অথবা উহার অনুরূপ কোন অমঙ্গলকে তার থেকে দূরে রাখবেন।সাহাবীগণ বললেন ,তবে তো আমরা অনেক দোয়া করব। হুজুর(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ আরো অধিক দানকারী।

(৮) দোয়া হলো এবাদতের মগজ।

(৯)আমি কি তোমাদেরকে এমন জিনিসের কথা বলব না যা তোমাদেরকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং তোমাদের জন্য অধিক রিজিক নিয়ে আসবে? (তা হলো) তোমরা দিন-রাত আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকো। কেননা দোয়াই হলো মুমিনের অস্ত্র স্বরূপ।

(১০) সতর্কতা অবলম্বন করা তকদীরের লিখন খণ্ডাতে পারে না কিন্তু দোয়া আগত ও অনাগত উভয় প্রকার বিপদেই উপকারী। (অনেক সময় এমন হয় যে) বিপদ আসতে থাকে আর পথিমধ্যে দোয়ার সাথে সাক্ষাত হয় , অতঃপর কেয়ামত পর্যন্ত উভয়ের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে।

(১১) দোয়া করতে তোমরা কেউ অক্ষম হয়ো না। কেননা দোয়া চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় কেউ কখনো ধ্বংস হয় না।

(১২) হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি আমাকে যতক্ষণ ডাকবে এবং আমার নিকট আশা পোষণ করবে, তোমার গুনাহ যাই থাকুক না কেন, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব। আর তাতে আমি কোন পরওয়া করব না।

(১৩) যে ব্যক্তি কোন প্রকার অভাবের শিকার হয়ে তা মানুষের কাছে বলল, তার অভাব কখনো মোচন করা হবে না। আর যে অভাবের শিকার হয়ে তা আল্লাহর কাছে পেশ করল, আল্লাহ তাকে সত্বর অথবা বিলম্বে রিজিক দিয়ে সাহায্য করবেন।

গায়েবী টাকা পাওয়ার উপায়

(হাদীসগুলো মূলতঃ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ও মেশকাত শরীফ থেকে নেয়া হয়েছে। ) দোয়া কিভাবে কবুল হবে তা জানতে হলে নীচে দেয়া কিছু হাদীসের ভাবার্থ পড়ুন।

(১) যে ব্যক্তি ভালবাসে যে, দুঃখের সময় আল্লাহ তাঁর দোয়া শুনবেন, সে যেন সুখের সময় বেশী করে দোয়া করে।

(২) তোমরা কবুলের বিশ্বাসের সাথে দোয়া কর এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ অমনোযোগী , অবহেলাকারী অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।

See also  বাথরুমে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার দোয়া - টয়লেটে যাওয়ার নিয়ম

(৩) হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন,বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারনা রাখে আমি তার সাথে তেমনই আচরণ করি এবং বান্দা যখন আমাকে ডাকে আমি তার নিকটেই থাকি।

(৪)কোন মুসলমান তার অপর মুসলমান ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে যে দোয়া করে,উহা কবুল করা হয়। তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকেন,যখনই সে তার (অনুপস্থিত)ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দোয়া করে,নিযুক্ত ফেরেশতা বলেন,আমীন এবং তোমাকেও ঐরূপ দেয়া হোক।

(৫)বান্দার দোয়া কবুল করা হয়,যতক্ষন না সে গুনাহের কাজের অথবা আত্মীয়তা বন্ধন ছেদের দোয়া করে এবং যতক্ষন না সে তাড়াহুরা করে। জিজ্ঞাসা করা হইল,ইয়া রাসূলাল্লাহ!তাড়াহুরা করা কি? হুজুর(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বললেনঃ এরূপ বলা যে, আমি(এই)দোয়া করেছি,আমি(ঐ)দোয়া করেছি,কৈ আমার দোয়া তো কবূল হতে দেখলাম না; অতঃপর সে ক্লান্ত হয়ে (অথবা এই অর্থ হবে যে,বিরক্তি বোধ করে,অধৈর্য হয়ে)দোয়া ছেড়ে দেয়।

(৬)আমাদের প্রতিপালক(এর রহমত)প্রতি রাত্রের শেষ তৃতীয় ভাগে এই নিকটতম আসমানে নেমে আসে এবং তিনি বলতে থাকেনঃ কে আছ যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দিব?কে আছ ,যে আমার কাছে চাইবে,আর আমি তাকে তা দান করব এবং কে আছ,যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করব? {আরেকটি কাজ করবেন, প্রতিদিন সকল মূমিন নর-নারীর জন্য সাতাশ বার ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।

তাহলে আপনি মুস্তাজাবুদ্দা’ওয়াত হতে পারবেন।} এছাড়া কোন্‌ কোন্‌ ব্যক্তিদের দোয়া কবুল হয়,কখন কখন দোয়া কবুল হয়(যেমন আযান ও একামতের মধ্যবর্তী সময়, ফরজ নামাজের পর),দোয়ার কি কি আদব আছে,কেন দোয়া কবুল হয় না (যেমন হারাম খেলে,সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ না করলে ইত্যাদি) এগুলো আলেমদের থেকে বা সাধারণ দোয়ার কোন বই থেকে অবশ্যই বিস্তারিত জেনে নেন।

শেষকথাঃ

গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া নিয়ে যতটুকু আলোচনা করলাম আল্লাহ আমাকে সহ আপনাকে আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

ট্যাগঃ গায়েবী ধন পাওয়ার দোয়া,  গায়েবী টাকা পাওয়ার উপায়,  গায়েবী রিজিক বৃদ্ধির আমল।

Leave a Comment