হ্যালো ভিউয়ার্স, আশা করি সকলে অনেক ভালো আছেন। আপনাদের কে আমাদের এই সাইটে আমার পক্ষ থেকে জানাই স্বাগতম। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে দরখাস্ত লেখার নিয়ম এই বিষয় টি নিয়ে কথা বলবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করে দেওয়া যাক।
আমাদের নানা প্রয়োজনীয় কাজে দরখাস্ত এর প্রয়োজন হয়। তাই প্রতিটি ব্যক্তির উচিত দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিক ভাবে জানা ও তা আয়ত্ত করা। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা বাংলা ব্যকরণ কে অবহেলা করার জন্য এখন দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিক ভাবে জানেন না।
তো তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট টি। এই পোস্ট টি পড়লে আপনারা সকল প্রকার দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিকভাবে আয়ত্ত করতে ও বুঝতে পারবেন।
সূচিপত্র
দরখাস্ত কী?
ব্যকরণের ভাষায়, স্কুল, কলেজ কিংবা নানা অফিস বা প্রতিষ্ঠান প্রধান অথবা দায়িত্বপ্রধান ব্যক্তিকে অনুরোধ জানিয়ে যে পত্র লেখা হয় সেটাকে দরখাস্ত বলে। দরখাস্ত মূলত সংক্ষিপ্ত আকারে লেখা হয়ে থাকে। তবে এই সংক্ষিপ্ত লেখার মধ্য শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় বিষয় তুলে ধরতে হয়।
প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া অন্য কিছু দরখাস্ততে দিতে হয় না। দরখাস্ত লেখার জন্য অনেক সময় প্রমাণ স্বরূপ কিছু অনুলিপি সংযুক্তি করতে হয়।
দরখাস্ত কত প্রকার
অনেকেই আছেন যারা মানপত্র, অঙ্গিকার নামা, ব্যক্তিগত চিঠি ইত্যাদি কে দরখাস্ত এর মধ্য ধারণা করে বা বলে থাকেন। তবে আকার ও ধরণগত দিক দিয়ে দেখতে গেলে দরখাস্ত কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ-
১. আবেদন পত্র বা দরখাস্ত,
২. ব্যাবসায়িক পত্র।
নিম্নে আমরা এই দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
আবেদন পত্র বা দরখাস্তঃ কোনো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব প্রধান বা প্রতিষ্ঠান প্রধান কে অনুরোধ করে যে পত্র লেখা হয় তাকে দরখাস্ত বা আবেদন পত্র বলে। আবেদন পত্র মূলত স্কুল, কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয় বা অফিস তথা প্রতিষ্ঠানের জন্য লিখতে হয়।
ব্যবসায়িক পত্রঃ নিজের প্রয়োজনে কিংবা ব্যবসার প্রয়োজনে অনেক সময় অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পত্র বিনিময়ের প্রয়োজন হয়। এই সব পত্রের সাথে অনেক ক্ষেত্রেই আর্থিক লেনদেন যুক্ত থাকে। এই সকল পত্রকে ব্যবসায়িক পত্র বলে।
আমরা এতক্ষণে জেনে গেছি যে দরখাস্ত মূলত কী, এবং কত প্রকার। আমরা এইবার জানবো কীভাবে সকল প্রকার দরখাস্ত লিখতে হয়। তো চলুন এবার জেনে নেই দরকাস্ত লেখার নিয়ম সঠিকভাবে।
আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম
একটু আগেই আমরা জেনেছি আবেদন পত্র বা দরখাস্ত কী। এবার আমরা এটি লেখার নিয়ম সম্পর্ক্ব জানবো। তবে এর আগে আমি আপনাদের আরো একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত করতে চাই।
সেটা হলো, আমরা চাইলে আবার আবেদন পত্রকে ২ ভাগে ভাগ করতে পারি, সেটা হলো,
১. সাধারণ আবেদন পত্র,
২. জীবন বৃত্তান্ত আবেদন পত্র।
নিচে আমরা এই দুইটি কিভাবে লেখতে হয়ে সেই সম্পর্কেই জানবো।
আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম
নিম্নে আমরা একটি আবেদন পত্র বা দরখাস্ত কিভাবে লিখতে হয় সে সম্পর্কে জানবো। একটি সঠিক দরখাস্ত লিখতে হলে নিচের নিয়ম গুলো ফলো করুনঃ
১. প্রথমে যে কাজগে দরখাস্ত লিখবেন সেটা সুন্দর করে মার্জিন করে নিবেন। এটা করা কখনো ভুলবেন না।
২. এবার উপরের বাম সাইডে প্রথমে যে তারিখে দরখাস্ত লিখছেন সেই তারিখ দিয়ে দিন। যেমনঃ ১ই অক্টোবর, ২০২২
৩. এবার তারিখের থেকে হালকা একটু নিচে লিখুন “বরাবর” এর পর ঠিক এর নিচেই যার কাছে দরখাস্ত লিখছেন তার নাম দিন। যেমনঃ প্রধান শিক্ষক, চ্যায়ারম্যান ইত্যাদি।
৪. এবার আপনি যে প্রতিষ্ঠানের নিকট এই দরখাস্ত লিখছেন তার নাম দিন। যেমনঃ শেখ রাসেল হাই স্কুল, ঢাকা ইউনিয়ন পরিষদ, ইত্যাদি।
৫. এবার উক্ত প্রতিষ্ঠানটি যে স্থানে রয়েছে তার ঠিকানা দিন ছোট করে, বর্ণণা করে দিবেন না। যেমনঃ মনে করুন প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার মিরপুর-১ এ অবস্থিত, তাহলে লিখবেন “মিরপুর-১, ঢাকা।”
৬. এবার যে বিষয়ে দরখাস্ত টি লিখছেন সেই বিষটি সুন্দর করে এক লাইনের ভিতর লিখে দিন।
৭. যেহেতু দরখাস্ত তে সর্বদা সম্মানীয় কাউকে লিখতে হয় তাই সব সময় একটি সম্মানীয় শব্দ দিয়ে লেখা শুরু করতে হয়। যেমনঃ জনাব, মহোদয় ইত্যাদি।
৮. এবার আপনি যে প্রতিষ্ঠানের নিকট দরখাস্ত লিখছেন সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনার কী সম্পর্ক তা লিখুন। যেমনঃ যদি স্কুলের জন্য লিখেন তাহলে “আমি আপনার বিদ্যালয়ের ‘ক’ শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্র” এই কথা দিয়ে শুরু করতে পারেন।
৯. এবার দরখাস্ত টি কেন লিখছেন সেই বিষয়টি সুন্দর করে ৭-৯ লাইনের মধ্য ফুটিয়ে তুলুন। যেহেতু দরখাস্ত ১ পেজ এ লিখলে ভালো হয় তাই আমরা অল্প লাইনের ভেতরে সবটা ফুটিয়ে তুলবো।
১০. এবার, “বিনীত নিবেদন এই যে,” এই কথা টি লিখে আমরা যে কারনে দরখাস্ত লিখছি সেটা মঞ্জুর করার জন্য অনুরোধ করবো।
১১. শেষে নিজের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে দরখাস্ত লেখা শেষ করবো।
উপরের নিয়ম গুলো বুঝলে খুব সহযে দরখাস্ত লিখতে পারবেন। আর যদি নাও বুঝেন কোনো সমস্যা নেই। উপরের উক্ত নিয়ম অনুসরণ করে একটি নমুনা দিয়ে দিচ্ছি, সেটা দেখলেই সব বুঝে যাবেন।
আরো পড়ুনঃ নগদ একাউন্ট দেখার নিয়ম
দরখাস্ত এর একটি নমুনা
১ই অক্টোবর, ২০২২
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
রহমাতুল্লাহ মডেল হাই স্কুল
লালবাগ, ঢাকা
বিষয়ঃ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির জন্য ছুটি চেয়ে আবেদন।
মহোদয়,
আমি আপনার বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্র। ঠান্ডা – জ্বরে আক্রান্ত থাকার কারণে আমি গত ২৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ থেকে ২৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখ পর্যন্ত ৩ (তিন) দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে পারিনি।
অতএব, বিনীত নিবেদন এই যে, আমার অনিচ্ছাকৃত উক্ত তিন দিনের ছুটি মঞ্জুর করা হলে মহোদয়ের নিকট বাধিত হব।
বিনীত নিবেদক,
“ক” হাসান
শ্রেণিঃ ৭ম, রোলঃ ৪
শাখাঃ খ শাখা।
তো উপরের নিয়ম টি যদি আপনারা ভালো করে ফলো করেন তাহলে আপনারা সঠিক ভাবে দরখাস্ত লিখতে পারবেন। এই আর্টিকেল এ আমরা জানতে পারলাম দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিক ভাবে। যদি বুঝতে কোনোভাবে অসুবিধা হয় তাহলে তা কমেন্ট করে জানাবেন।
আর আজকের পোস্ট এ আমরা আর জীবন বৃত্তান্ত ও ব্যবসায়িক পত্র নিয়ে এগোবো না তাহলে আর্টিকেল অনেক বড় হয়ে যাবে এবং আপনাদেরই বোরিং লাগবে। আমরা অন্য কোনো আর্টিকেল এ এই বিষয়ে আলোচনা করবো।
দরখাস্ত লেখার নিয়ম ভিডিও
শেষ কথাঃ
তো ভিউয়ার্স আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের কাছে অনেক টা ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে কিন্তু অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আমাদের। আর এরকম সব পোস্ট পেতে প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকুন আমাদের এই ওয়েব সাইট টি। আবার দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্ট এ। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেয।