হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি আপনারা সকলেই অনেক ভালো আছেন। আপনাদের কে আমাদের এই সাইটে আমার পক্ষ থেকে জানাই স্বাগতম। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর এই বিষয় টি নিয়ে কথা বলবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করে দেওয়া যাক।
সূচিপত্র
পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
প্রিয় ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, তোমাদের বইয়ের পাঠ্য বিষয় বস্তুর মধ্য অন্যতম ও প্রয়োজনীয় হলো পড়ে পাওয়া গল্প। পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর নিচে কয়েকটি দেওয়া হলো। আশা করি সেগুলো তোমাদের কাজে লাগবে। নিচে বাছাই করা কিছু প্রয়োজনীয় এবং যে বিষয় থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয় এটা থেকে সেগুলোর অংশ বিশেষ দেওয়া হলো।
পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল – ১
আরিফ ট্যাক্সিক্যাব চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। একবার একজন আরোহীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে সে বিশ্রাম নিচ্ছিল। সহসা গাড়ির ভিতরে দৃষ্টি পড়তে সে দেখতে পেল একটি মানিব্যাগ পড়ে আছে সিটের ওপর। ব্যাগে অনেকগুলো ডলার। কিন্তু ব্যাগে কোনো ঠিকানা পাওয়া গেল না। সে সন্ধ্যা অবধি অপেক্ষা করল। নিরুপায় হয়ে সে পত্রিকা অফিসে গিয়ে সম্পাদককে একটি বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে দেবার অনুরোধ জানায়।
ক. ‘পড়ে পাওয়া’ কী ধরনের রচনা?
খ. ওর মতো কত লোক আসবে। বিধুর এ কথাটির অর্থ বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের আরিফকে কোন যুক্তিতে বিধুদের সঙ্গে তুলনা করা যায়? – বুঝিয়ে লেখ
ঘ. কলেবরে ক্ষুদ্র হলেও আরিফ চরিত্রটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল সুরকেই ধারণ করে আছে।— মূল্যায়ন কর।
উত্তরঃ
ক. ‘পড়ে পাওয়া’ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত কিশোর গল্প। খ. ওর মতো কত লোক আসবে’- ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে বিধু, লোভী চরিত্রের মানুষদের উদ্দেশে এ কথাটি বলেছে। আম কুড়াতে গিয়ে একটি বাক্স কুড়িরো পেয়ে বিধু ও তার বন্ধুরা মিলে বাক্সটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে কাগজে খবরটি লিখে রাস্তার ধারে গাছে গাছে লাগিয়ে দেয়। খবর পেয়ে নানা ধরনের অসৎ লোকেরা ভুয়া মালিক সেজে আসতে থাকে। প্রকৃত অর্থে লোভ সামলাতে না পেরে নিজেদের বাক্স না হওয়া সত্ত্বেও তারা বাক্স নিতে আসে। এসব লোভী অসৎ মানুষদের উদ্দেশে বিধু এ মন্তব্যটি করেছে।
গ. সৎ ও দায়িত্বশীল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে আরিফকে বিধু চরিত্রের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
পড়ে পাওয়া গল্পের বিধুরা বাক্সের প্রকৃত মালিকের কাছে বাক্সটা ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল এবং নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে। লিফলেট ছাপিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল। এতে তাদের নির্লোভ মনমানসিকতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকের আরিফ ট্যাক্সিক্যাব চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। একবার একজন আরোহীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে সে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এমন সময় গাড়ির ভেতরে একটি মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে এবং ব্যাগে অনেক ডলার দেখতে পায়। কিন্তু সে লোভের বশবর্তী না হয়ে মালিককে ব্যাগটি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপানোর ব্যবস্থা করে। কোথাও কোনো জিনিস কুড়িয়ে পেলে তা মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেয়া মানব চরিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণ। এই গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণটিরই প্রতিফলন লক্ষ করা যায় উদ্দীপকের আরিফ এবং গল্পের বিধুদের মধ্যে। উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়- নৈতিকতা ও মানসিকতার দিক থেকে আরিফ ও বিধু চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. “কলেবরে ক্ষুদ্র হলেও আরিফ চরিত্রটি পড়ে পাওয়া গল্পের মূল সুরকেই ধারণ করে আছে। ” মন্তব্যটি যথার্থ। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের লেখক এ গল্পটিতে একদল কিশোরের নির্লোভ মানসিকতার পরিচয় তুলে ধরেছেন। গল্পে এক ঝড়ের রাতে বাদল ও গল্পকথক একটি টিনের বাক্স কুড়িয়ে পায়। বিধুর নেতৃত্বে একদল গ্রাম্য কিশোর লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সেই টিনের বাক্সের প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করতে তৎপর হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত তারা টিনের বাক্সের প্রকৃত মালিক খুঁজেও পায় এবং তাকে টিনের বাক্সটি ফিরিয়ে দেয়। উদ্দীপকের আরিফও তার ট্যাক্সিক্যাবে কোনো এক আরোহীর ফেলে যাওয়া মানিব্যাগটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে, তা এ সততা ও নৈতিকতারই পরিচায়ক। সততা, দায়িত্ববোধ, কর্তব্যপরায়ণতা এগুলো একজন সৎ লোকের গুরুত্বপূর্ণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এসব আদর্শে
উজ্জীবিত মানুষ নৈতিক চেতনায় সবার ঊর্ধ্বে থাকেন। আর এ আদর্শেরই প্রতিফলন লক্ষ করা যায় উদ্দীপকের আরিফের মধ্যে পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল বিষয় সততা ও নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতার প্রতিফলন উদ্দীপকের স্বল্প পরিসরে আরিফের মধ্যে উঠে আসায় প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।
পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল – ২
সন্ধ্যায় দেখা গেল, নিজেদের ছাগলের সাথে অতিরিক্ত একটি ছাগলও আধালে ঢুকছে। এশার নামাজ পার হয়ে গেল, কিন্তু কেউ খোঁজ নিতে এলো না। দাদু বললেন, না, না, চুপ করে থাকা ঠিক হবে না। এক কাজ কর, রফিক শফিক বেরিয়ে পড়। প্রতিবেশী নাবিল আর তালিমকে সাথে নিয়ে দুজন দুদিকে যেও। মসজিদ থেকে চোঙ্গা নিয়ে গাঁয়ে ঘোষণা দিয়ে আস। কিছুক্ষণের মধ্যে দু ভাই দাদুর পরামর্শমতো বলতে লাগল, ভাইসব, একটি ছাগল পাওয়া গেছে। যাদের ছাগল তারা দয়া করে মতিন শিকদারের বাড়ি থেকে নিয়ে
যান।
ক. লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কোন ধরনের লেখক হিসেবে সমধিক পরিচিত?
খ. ‘দুজনই হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম।’ কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. রফিক-শফিকের চোঙ্গা ফোঁকার ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া গল্পের কোন ঘটনার সাথে সংগতিপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দাদু যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনারই প্রতিভূ- বিশ্লেষণ কর।
উত্তরঃ
ক. লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃতিপ্রেমী ও জীবনধর্মী লেখক হিসেবে সমধিক পরিচিত।
খ. দুজনেই হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম’ কথাটিতে কিশোরদের সৎ ও নির্লোভ মানসিকতার দিকটিকে বোঝানো হয়েছে। পড়ে পাওয়া’ গল্পে এ দুজন হচ্ছে বাদল এবং গল্পকথক। আম কুড়াতে গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া বাক্সটি হয়তো কোনো গরিব লোকের হবে, সে হয়তো বাক্সের চিন্তায় রাতে ঘুমোচ্ছে না, তার কষ্ট হবে এই চিন্তা করে কথক বাদলকে বাক্সের তালা ভাঙতে নিষেধ করে এবং বাক্সটি ফেরত দেয়ার কথা চিন্তা করে। গরিব মানুষের প্রতি তাদের এ ভালোবাসা ও সহানুভূতি ধর্মেরই অঙ্গ। তাই বলা হয়েছে, দুজনেই হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম
গ. রফিক-শফিকের চোঙা ফোঁকার ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া গল্পের বিষু, নিধু বাদলদের গাছে কাগজের লিফলেট লাগানোর ঘটনার সাথে সংগতিপূর্ণ। সততা, নির্লোভ মানসিকতা, কর্তব্যপরায়ণতা প্রভৃতি মানব চরিত্রের মহৎ গুণ। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পটির মধ্যে এই নীতিবোধগুলোর প্রকাশ লক্ষণীয়। লেখক এখানে গল্প বলার হলে একদল কিশোরের নির্লোভ ও দায়িত্বশীল মানসিকতার চিত্র অঙ্কন করেছেন। গল্পে বিধুরা নদীর ধারে রাস্তায় ভিন্ন ভিন্ন গাছে কাগজের লিফলেট লাগায়। কারণ তারা বাক্সের প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করে বাক্সটি ফেরত দিতে চায়। এর মধ্য দিয়ে তাদের উন্নত নৈতিকতাবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। উদ্দীপকে রফিক ও শফিকের বাড়িতে নিজেদের ছাগলের সঙ্গে অন্য একজনের ছাগল আথালে ঢুকে পড়ে। তাই তারা দাদুর পরামর্শমতো ছাগলের প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করার জন্য চোঙ্গা নিয়ে গায়ে ঘোষণা দেয়-যার ছাগল সে যেন এসে মতিন শিকদারের বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। সুতরাং রফিক- শফিকের চোঙ্গা ফোকার ঘটনাটি পড়ে পাওয়া গল্পের বাক্সটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গাছে লিফলেট টানানোর ঘটনার সাথে সংগতিপূর্ণ।
ঘ. উদ্দীপকের দাদু যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনারই প্রতিভূ” মন্তব্যটি যথার্থ। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে কিশোরদের ঐক্যচেতনার যেমন পরিচয় পাওয়া যায়, তাদের চারিত্রিক দৃঢ়তার পাশাপাশি তীক্ষ্ণ বিবেচনাবোধও পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিশোরদের এমন সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধে বয়োজ্যেষ্ঠরাও বিস্মিত, অভিভূত। গল্পকার কিশোরদের চরিত্রের দ্বারা আলোচ্য চেতনাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তারা বাক্সের মালিককে খুঁজে বের করে তার হাতে বাক্সটি বুঝিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
উদ্দীপকের রফিক, শফিক দাদুর কথামতো মসজিদ থেকে চোঙ্গা নিয়ে ছাগল পাওয়ার ঘোষণার প্রচার করে। কারণ দাদু জানে ছাগলটি তাদের নয়, আর যে ব্যক্তির ছাগলটি হারিয়েছে সে হয়তো ছাগলের চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারবে না। তাই তিনি তাদেরকে ঘোষণা দিতে বলেন। অথচ ইচ্ছা করলে তিনি ছাগলটি নিজের সম্পত্তিতে পরিণত করতে পারতেন। কিন্তু তার নির্লোভ মানসিকতা এবং কর্তব্যবোধ তাকে সততার ব্যাপারে অটল থাকতে সাহায্য করেছে, যা গল্পের মূল চেতনাকে ধারণ করেছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের দাদু পড়ে পাওয়া গল্পের মূল চেতনার প্রতিভূ।
আরো পড়ুনঃ সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল – ৩
রিকশাওয়ালা জাভেদ রাস্তায় ব্যাগ ভর্তি টাকা পড়ে পেল। প্রথমে সে মনে করল এই টাকা দিয়ে সে ব্যবসা করে বড়লোক হবে। কিন্তু সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে ভাবল যার টাকা সে কতটা কষ্ট পাচ্ছে। একথা ভেবে সে সিদ্ধান্ত নিল যে, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকৃত মালিককে টাকা ফিরিয়ে দিবে। এজন্য সে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিল।
ক. ‘পত্রপাঠ বিদায়’ কথাটির অর্থ কী?
খ. ‘এখন জলে নামব না’ -কথাটির প্রাসঙ্গিকতা বর্ণনা কর।
গ. উদ্দীপকের জাভেদের সিদ্ধান্ত ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের যে দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ.“উদ্দীপকে জাভেদের মনোভাব ও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বালকদের অনুভ‚তি একই সূত্রে গাঁথা।” – উক্তিটির যথার্থতা বিচার কর।
উত্তরঃ
ক. ‘পত্রপাঠ বিদায়’ কথাটির অর্থ হচ্ছে তৎক্ষণাৎ বিদায়।
খ. ঝড় শুরু হতে পারে সে কারণে বিধু বন্ধুদেরকে বলেছিল ‘এখন পানিতে নামব না।’
কালবৈশাখীর ঝড় শুরু হলে আম কুড়ানোর আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। বিশেষ করে বাড়–য্যেদের মাঠের বাগানে চাঁপাতলীর আম যেমন সুস্বাদু, তেমনি মিষ্টি। বন্ধুদের মধ্যে বিধুর কথা সকলে মানে। তাই যদি ঝড় শুরু হয় তাহলে আম কুড়াতে হবে, শুধু শুধু আর নদীতে স্থান করে লাভ নেই। বিধুর বিজ্ঞতাসুলভ উক্তিটি এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক।
গ. ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ দিক কিশোরদের সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধ। গল্পের এ দিকটির সাথে উদ্দীপকের জাভেদের সিদ্ধান্ত সাদৃশ্যপূর্ণ।
লোভ সহজাত হলেও উদ্দীপক ও গল্পে তা ক্ষণস্থায়ী হয়েছে দায়িত্বশীলতার কাছে। বয়সে ছোট হলেও গল্পের কিশোররা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে পড়ে পাওয়া অর্থ সম্পদ ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে। অনুরূপ দায়িত্বশীলতা ও কর্তব্যবোধের পরিচয় দিয়েছে রিকশাওয়ালা জাভেদ।
উদ্দীপকের রিকশাওয়ালা জাভেদ ব্যাগভর্তি টাকা পেয়ে বড়লোক হবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু তার সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধের কাছে সব স্বপ্ন যেন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। সে প্রকৃত মালিকের খোঁজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। অনুরূপ পরিকল্পনা দেখা যায় গল্পের কিশোরদের মধ্যে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের জাভেদের সিদ্ধান্ত ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোর চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ দিক সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. “উদ্দীপকের জাভেদের মনোভাব ও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বালকদের অনুভ‚তি একই সূত্রে গাঁথা।” উক্তিটি যেকোনো বিচারেই যথার্থ।
মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই উন্নত মানবিক বোধের পরিচয় দেয়। স্বার্থের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে হয়ে ওঠে অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। এ ধরনের দৃষ্টান্তের দেখা পাওয়া যায় প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে।
উদ্দীপকের জাভেদ রিকশাওয়ালা। অবর্ণনীয় কষ্টে তার জীবিকা নির্বাহ হয়। এ অবস্থায় ব্যাগভর্তি টাকা তার চরম প্রার্থিত। যে টাকার লোভ সংবরণ করা অত্যন্ত দুরূহ। কিন্তু উন্নত মানবিকতাবোধসম্পন্ন জাভেদ তার মনোভাব পাল্টে ফেলে। সে উন্নত কর্তব্যবোধের পরিচয় দেয়। তার মনের পর্দায় ভেসে ওঠে যে ব্যক্তির টাকা হারিয়েছে তার কষ্টের চিত্র। এ মনোভাবের যথাযথ মূল্য দিয়ে সে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় প্রকৃত মালিককে টাকা ফিরিয়ে দিতে। অনুরূপ মনোভাবের পরিচয় মেলে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বালকদের অনুভ‚তিতে। বালকরা অর্থ সম্পদ পেয়ে তা ভোগের চিন্তা পরিহার করে প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
পড়ে পাওয়া গল্পের আরো সৃজনশীল
প্রিয় বন্ধুরা উপরে তোমাদের জন্য ৩ টি সৃজনশীল প্রশ্ন এবং উত্তর দেওয়া হয়েছে। আর সেই আলোকে নিচে আরো কয়েকটি সৃজনশীল দেওয়া হলো উত্তর ছাড়া। সেইগুলো তোমরা উপরের সৃজনশীল এবং পাঠ্য বইয়ের আলোকে সলভ করার চেষ্টা করবে।
পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল – ৪
অর্ণব তার মায়ের অপারেশনের টাকা জোগাড় করার জন্য দিশেহারা। হঠাৎ সে হাসপাতালের সিঁড়িতে পাঁচশ টাকার এক বান্ডিল নোট দেখতে পায়। তার মন আনন্দে ভরে ওঠে। পরক্ষণেই যার টাকা তার কথা ভেবে সে মর্মাহত হয়। অবশেষে সে টাকাগুলো থানায় জমা দেয় এবং প্রকৃত মালিক তা ফেরত পায়।
ক. বালকদের মধ্যে কার হাতের লেখা ভালো ছিল?
খ. “দুজনে হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম।” – ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের অর্ণবের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোরদের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ.“উদ্দীপকটিতে যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনারই সন্ধান মেলে।” – উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল – ৫
জসিম মাইক্রোবাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। একবার এক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। সহসা তার গাড়ির ভিতরে দৃষ্টি পড়তেই দেখতে পেল, একটি তালা বন্ধ সুটকেস পড়ে আছে। কিন্তু ঐ ব্যাগে কোনো ঠিকানা পাওয়া না যাওয়ায় সে ঘটনা কাগজে লিখে প্রচার করল।
ক. পড়ে পাওয়া কী ধরনের রচনা?
খ. “ওর মত কত লোক আসবে” -কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে জসিমকে কোন যুক্তিতে বিধুদের সঙ্গে তুলনা করা যায়?
ঘ. “জসিমের ঘটনাটি ক্ষুদ্র হলেও চরিত্রটি পড়ে পাওয়া গল্পের মূল চরিত্রকেই লালন করে আছে” -মূল্যায়ন কর।
পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল – ৬
রাস্তায় যাওয়ার পথে একটি লোককে চিৎকার করে কাঁদতে দেখে থমকে দাঁড়ায় মুহসীন। কী হয়েছে জানতে চাইলে লোকটি বলে একটি চোর তার মানিব্যাগ চুরি করেছে। মুহসীন চারদিকে তাকিয়ে চোরের গতিবিধি লক্ষ করে তার পিছু নিল। অনেক কষ্টে চোরটিকে ধরল, কিন্তু ততক্ষণে মানিব্যাগের মালিক অন্যত্র চলে গেল। মানিব্যাগ ভর্তি টাকা ছিল। মানিব্যাগে পাওয়া ঠিকানা অনুযায়ী টাকাসহ মানিব্যাগটি ফেরত দিয়ে আসল মুহসীন।
ক. কোথায় ভূত আছে বলে সবাই জানে?
খ. কালবৈশাখীর ঝড় মানেই আম কুড়ানো! উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কোন কোন ঘটনাকে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ.‘সততা ও নির্লোভ মানসিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়েই মুহসীন মানিব্যাগ ফেরত দিয়েছিল’ – ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
শেষ কথা
তো প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই পোস্ট এ আপনারা জানলেন কয়েকটি পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর এবং এরই সাথে কিছু এক্সট্রা সৃজনশীল প্রশ্ন। আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের কাছে অনেক টা ভালো লেগেছে।
ভালো লেগে থাকলে কিন্তু অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আমাদের। আর এরকম সব পোস্ট পেতে প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকুন আমাদের এই ওয়েব সাইট টি তে। আবার দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্ট এ। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেয।