শিক্ষা সফর
সূচিপত্র
ভূমিকা
আমরা প্রায়শই দেখে থাকি যে বিভিন্ন প্রাইমারি কিন্ডারগার্টেন, স্কুল থেকে শুরু করে, হাইস্কুল কলেজ,ইউনিভার্সিটি,শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দল বেধে শিক্ষা সফরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমন করে থাকে।
এটাকেই শিক্ষাসফর বলা হয়ে থাকে।আবার সংক্ষেপে এভাবে ও বলা যায় শিক্ষার উদ্দেশ্যে যে সফর সেটাকেই শিক্ষা সফর বলা হয়ে থাকে। তবে শিক্ষা সফরে কোথায় যাওয়া যাবে সেটার কোন নিদিষ্ট স্থান বা লোকেশন নেই।এটা নির্ভর করে যারা শিক্ষা সফরে যাবেন সেই সব শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উপর। বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা, বাইরের পরিবেশ থেকে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করা, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বিষয়ে পাঠদান করা হয়ে থাকে।
সে সবের প্রায় প্রতিটি বিষয় ই আমাদের জীবন ও জীবন ব্যাবস্থার সাথে সম্পৃক্ত।শিক্ষা সফরের বিভিন্ন স্তর ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
সফর বা ভ্রমন কী
শিক্ষামূলক ভ্রমনের উদ্দেশ্যে জানার পূর্বে আমরা ভ্রমন কী তা একটু জেনে নেই।ভ্রমন হচ্ছে ভৌগলিক স্থানের মধ্যে গতিবিধ বা চলন যা মানুষ একস্থান থেকে অন্যস্থানে পায়ে হেটে গাড়িতে, সাইকেল ট্রেনে, লঞ্চে,কিংবা প্লেনে করে যায়। ভ্রমনে সাথে করে, ট্রাভেল ব্যাগ, ল্যাগেজ,নিতে পারে আবার নাও নিতে পারে। আবার যাত্রাপথে কোথাও কিছু সময়ের জন্য বা কয়েকদিনের জন্য অবকাশ যাপন কে ও ভ্রমন বলা যেতে পারে।
ভ্রমন আমাদের আনন্দ দেবার পাশাপাশি আমাদের একঘেয়েমি দূর করার পাশাপাশি ভ্রমন আমাদের নানাবিধ শিক্ষা ও দিয়ে থাকে। ভ্রমনে ষনেক কিছু শিখার রয়েছে। আমরা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে, ভূগোল, ইতিহাস পড়ে,অনেক পুথিগত বিদ্যা অর্জন করি ঠিকই কিন্তু সে জ্ঞান পরিপূর্ন নয়।
তাইতো পৃথিবী এবং ভূখন্ড সম্পর্কে জানার জন্য প্রয়োজন ভ্রমন বা সফর। কারন পৃথিবী কেবল মাত্র ক্যালেন্ডার বা বইয়ের কতগুলো পাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর বাইরে ও বিশাল পৃথিবী রয়েছে। ভূগোল ইতিহাস এর বাইরে ও উন্মুক্ত বিশাল আকাশের নিচে জীবন্ত প্রকৃতি দেশ পাহার পর্বত, সমুদ্র দেখে এবং তার অধিবাসীদের প্রত্যক্ষ স্পর্শ লাভ করে। তাদের জীবন ধারা সম্পর্কে জেনে বমরা যে জ্ঞান পাই বা জ্ঞান লাভ করি সেটায় হলো প্রকৃত জ্ঞান।
এর জন্য ভ্রমন বা সফরের কোন বিকল্প নেই। এছাড়া ও বর্তমানে অনেকে ভ্রমন কে পেশা হিসাবে নিয়েছেন। ভ্রমন করে টাকা আয় করে সেই টাকা দিয়ে আবার ভ্রমন। শিক্ষা সফর বা ভ্রমনের ফলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ভাবে জ্ঞান লাভ করছে, শিক্ষার অনুশীলন হচ্ছে যেমন
অন্যদের সাথে কথা বলতে শেখা
ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলার মাধ্যমে শিক্ষার্থী রা শিখবে যেকোন সংস্কৃতির লোকদের প্রতি আরো সহানুভূতি দেবে,বিভিন্ন স্থান এবং পটভূমির লোকদের সাথে তাদের আরো বেশি পরিচিতি হতে সাহায্য করে। অন্য লোকালয়ে ভ্রমন করার আগে নিজের এবং নিজের ক্লাসের স্থানীয় রীতিনীতির সাথে পরিচিত করা উচিত। কিভাবে কাউকে যথাযথভাবে অভ্যর্থনা জানাতে হয়। কোন বিষয়ে কথা বলার জন্য গ্রহনযোগ্য এবং সামাজি মিথস্ক্রিয়া অন্যান্য দিক গুলো জানা যায়।
সাংস্কৃতিক পর্যবেক্ষনঃ
একটি ভাল শিক্ষাসফরে শিক্ষার্থীরা নতুন চোখের মাধ্যমে একটি ভিন্ন সংস্কৃতি অনুভব করে। অনেক ট্যুর এখন স্বেচ্ছাসেবক, সুযোগ এবং বিভিন্ন লোকলয়ের বিভিন্ন আর্থসামাজিক স্তরের লোকেরা কিভাবে বাস করে তা দেখার জন্য অন্যান্য সুযোগ দিচ্ছে।
এ ধরনের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জীবনে বিভিন্ন স্তরের লোকদের প্রতি আরো সহানুভূতি গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এই সমস্যা গুলো কিভাবে শিক্ষার্থী বাড়ির কাছাকাছি লোকদের প্রভাবিত করে তাদের পরিবর্তন এর দিকে কাজ করতে অনুপ্রানিত করে তা প্রতিফলিত করতে এটি ও তাদের সাহায্য করে।
বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করার ক্ষমতা;একটি ভিন্ন সংস্কৃতি তে এবং একটি নতুন জায়গায় প্রথম বারের মতো এমবেড করা শিক্ষার্থী রা সে সংস্কৃতির বিষয়ে তারা যে বিভিন্ন বিষয়ে শিখছে তার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।পরিবেশ মত আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক এবং অন্যান্য বিষয় গুলো কিভাবে একে অপরের সাথে জড়িত তা শিক্ষার্থী রা আরো সুনির্দিষ্ট উপায়ে শিখতে শুরু করতে পারে।
শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যঃ
শিক্ষাসফরের উদ্দেশ্য হলো উচ্চ থেকে আরো উচ্চ চেতনা বা জ্ঞান লাভের জন্য।জ্ঞান অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে আমরা যতবেশি চেতনা সমৃদ্ধ হয়ে ওঠতে পারব ততো বেশি লাভবান হবো।শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্য খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে এর অনেক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সফর বর্তমানে শিক্ষার একটি অপরিহার্য অঙ্গরুপে স্বীকৃতি পেয়েছে।
কারন একমাত্র ভ্রমনে শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ, ভৌগলিক পরিচিতি এবং সেখানকার অধিবাসীদের জীবনযাত্রা সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে থাকে।সফরে শিক্ষার্থীরা পৃথিবী সম্পর্কে অনেককিছু ভাবতে শিখায়। তারা অবাক হয় পৃথিবীর রূপ বৈচিত্র দেখে।তারা এটা জানতে পারে যে তাদের অনেক কিছু শিখার বাকি রয়েছে।
শিক্ষা সফরের গুরুত্ব
জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে সাধারনত স্কুল কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বার্ষীক ভ্রমন বা সফরের আয়োজন করে। লক্ষ থাকে ছাত্র ছাত্রী দের সৃজনশীল জ্ঞান লাভ।ছাত্রজীবন শ্রেষ্ঠ সময়। ছাত্র রায় দেশ ও জাতির কর্নদার।দেশের সামগ্রিক উন্নত নির্ভর করে ছাত্রদের উপর। আজকে ছাত্ররায় আগামিদিনের দেশকর্মী ও সমাজ নেতা।
ভবিষ্যতে তারায় দেশ পরিচালনা করবে।অবশ্য মানব জীবনের পুরুটায় ছাত্রজীবন।কেননা পাঠ্যবই ছাড়া ও মানুষ মানুষের কাছ থেকে, প্রকৃতির কাছ থেকে ও প্রানিজগতের কিছুনা কিছু শিক্ষা লাভ করে থাকে সারাজীবন।ছাত্রজীবন শিক্ষা লাভের সময় তবে এ শিক্ষা লাভ শুধু পাঠ্যপুস্তকের নয়। পুথিগত বিদ্যা সবকিছু নয়
কবির ভাষায় বলা হয়েছে,,গ্রন্থ গত বিদ্যা আর পরের হস্ত ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।এ জন্য ছাত্রজীবন শিক্ষা সফর খুবই প্রয়োজন।এটি আমাদের ধরা বাধা একঘেয়ে জীবনকে নতুন মাত্রা দান করে।শিক্ষা সফরের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান অথবা কোন প্রাকমতিক সৌন্দর্য মন্ডিত স্থান অবলোকনের সুযোগ পাই।
এসব স্থান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ও জানতে পারি। এ ভ্রমন জ্ঞান এর ভান্ডার কে সমৃদ্ধ করে।শিক্ষা সফরকে ছাত্ররা সাধারনত পিকনিক হিসাবে আখ্যায়িত করে থাকে।শিক্ষা সফরে যাওয়ার জন্য, ছাত্রছাত্রীরা কোনো পার্ক, কোনো ঐতিহাসিক স্থান, বা কোনো পিকনিক স্পট নির্ধারন করে থাকে।নির্ধারিত গন্ডির বাইরে গিয়ে আমরা যদি তাদের পরবর্তী উচ্চ শিক্ষার সুবিধার্থে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ব বিদ্যালয়গুলোতে নিয়ে যেতে পারি তাহলে শিক্ষার্থীদের আরো বেশি উৎসাহিত করবে, অনুপ্ররনা জোগাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুঢ়োগ পাওয়ার ও পড়ার ক্ষেত্রে।
উপসংহার
সর্বোপরি বলা যায় বর্তমান সময় ছেলেমেয়েরা পড়ালেখার বিষয়ে উদাসীন। তারা পরাশুনার থেকে বিনোদন বেশি পছন্দ করে।সেজন্য শিক্ষকদের আরো বেশি কৌশলী হতে হবে কিভাবে তাদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও জাতির উন্নয়ন করা যায় তার ব্যাবস্থা করা।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেসব অভ্যাস ও মনোভাবেরসৃষ্টি করা যার সহায়তায় সে কৃত্বিতের সাথে ভবিষ্যৎ জীবনের সম্মুখীন হতে পারে। এবং অর্জিত জ্ঞান কে বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগের কৌশল শিখতে পারে। তার জন্য শিক্ষা সফরের ব্যাবস্থা করা।
শেষ কথাঃ
এই ছিলো শিক্ষা সফর নিয়ে রচনা লিখন। আগামী তে আবার দেখা হবে ভিন্ন কোন রচনা লিখন নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন Edutunebd এর সাথেই থাকুন।