হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি আপনারা সকলেই অনেক ভালো আছেন। আপনাদের কে আমাদের এই সাইটে আমার পক্ষ থেকে জানাই স্বাগতম। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর এই বিষয় টি নিয়ে কথা বলবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করে দেওয়া যাক।
সূচিপত্র
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
প্রিয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, তোমাদের বইয়ের পাঠ্য বিষয় বস্তুর মধ্য অন্যতম ও প্রয়োজনীয় হলো সিরাজউদ্দৌলা নাটক। সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর নিচে কয়েকটি দেওয়া হলো। আশা করি সেগুলো তোমাদের কাজে লাগবে। নিচে বাছাই করা কিছু প্রয়োজনীয় এবং যে বিষয় থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয় এটা থেকে সেগুলোর অংশ বিশেষ দেওয়া হলো।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ১
মির্জা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর ছিলেন ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তার মৃত্যুর পর বড় ছেলে হুমায়ুন বাসে সিংহাসনে আরোহণ করেন। দুঃখের বিষয় এই যে, সিংহাসনে আরোহণের পরই নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তথাপি সাহসিকতার সাথে তরুণ হুমায়ুন তাঁর শাসনকার্য চালিয়ে যান। হুমায়ুন তাঁর অন্যান্য ভাইসহ আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে অসহযোগিতা পাওয়া সত্ত্বেও শক্ত হাতে সবকিছু ধরে রাখতে সক্ষম হন।
ক. রবার্ট ক্লাইভ কাকে সেরা বিশ্বাসঘাতক বলেছেন?
খ. “কত বড় শক্তি, তবু কত তুচ্ছ।” উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের হুমায়ুনের সিংহাসনে আরোহণ এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার সিংহাসনে আরোহণের সাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. “আংশিক সাদৃশ্য থাকলেও হুমায়ুন ও সিরাজউদ্দৌলার পরিণতি এক নয়” – বিশ্লেষণ কর
উত্তরঃ
ক. রবার্ট ক্লাইভ উমিচানকে সেরা বিশ্বাসঘাতক বলেছেন।
খ. “কত বড় শক্তি, তবু কত তুচ্ছ। এ উক্তি নবাব সিরাজউদ্দৌলা করেছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে ইংরেজ সৈন্যদের সামনে নিজেদের অবস্থান বিবেচনা করে।
পলাশির যুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে মোট সৈন্য ছিল প্রায় তিন হাজার। তারা অস্ত্র চালনায় সুশিক্ষিত ছিল সেই তুলনায় নবাবের পক্ষে সৈন্য সংখ্যা ছিল ৫০ হাজারের বেশি। ছোট-বড় মিলিয়ে ইংরেজদের কামান ছিল গোটা দশেক আর নবাবের পদাশটারও বেশি। এত বড় শক্তি নিয়েও ইংরেজদের বিরুদ্ধে পলাশির যুদ্ধে নবাবের মনে আশঙ্কা ও সন্দেহ ছিল। কারণ তাঁর মনে হয়েছে মিরজাফর, রায়দুর্লভ, ইয়ার লুৎফ খাঁ নিজেদের সেনাবাহিনী নিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে না। তাই মিরমদানের সন্ধ্যে যুদ্ধের নকশা নিয়ে পর্যালোচনার সময় তিনি প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেন।
গ. উদ্দীপকের হুমায়ুনের সিংহাসনে আরোহণ এবং নবাব নিরাজউদ্দৌলার সিংহাসনে আরোহণের সাদৃশ্য রয়েছে। কারণ উভয়েই অল্প বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।
শিকার হয়েছে যা দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দেশের যুগে যুগে ষড়যন্ত্রের কারণে দেশপ্রেমিক নেতারা নির্মমতার শাসনব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে।
হুমায়ুনের অল্প বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করার আত্মীয়স্বজন দ্বারা নানামুখী ড়যন্ত্রের শিকার হন। ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নবাব সিরাজউদ্দৌলাকেও তাঁর নিকট আত্মীয়রা সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। তাই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তারা ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলান এবং গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে নবাব প্রতিকূল
পরিস্থিতির শিকার হন। তাই বলা যায়, সিংহাসন আরোহণের দিক দিয়ে হুমায়ূন ও সিরাজের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. “আংশিক সাদৃশ্য থাকলেও হুমায়ূন ও সিরাজউদ্দৌলার পরিণতি এক নয়”- মন্তব্যটি যথার্থ।
স্বার্থান্বেষী মানুষ ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে যায়। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং স্বজাতি ও স্বদেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। সাহসিকতার সঙ্গে এদের মোকাবিলা করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হয়।
উদ্দীপকের হুমায়ুন বাবার মৃত্যুর পর অন্ন ব্যাসে সিংহাসনে বসেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তিনি নানামুখী ষড়যন্ত্রের শিকার হন। শাসক হুমায়ুন দমে না গিয়ে তখন শক্ত হাতে হাল ধরেন। ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নবাব সিরাজউদ্দৌলাও অল্প বয়সে বাংলার মসনদে বসেন। তাঁর আত্মীয়জন এবং কতিপয় অমাত্য তাকে সহজভাবে নবাব হিসেবে মেনে নিতে পারেননি। তারা সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোপন ষড়যন্ত্র শুরু করেন। সব জেনেও নবাব তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে পারেননি । তাই তাকে করুণভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়।
উদ্দীপকের হুমায়ুন এবং ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজের মাঝে যথেষ্ট মিল থাকলেও ঠিকভাবে হাল ধরে হুমায়ুন দোর্দণ্ড প্রতাপে শক্ত হাতে সবকিছু মোকাবিলা করেন। “সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নবাবের মাঝে এমনটি দেখা যায় না। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের অত্যন্ত বিশ্বাস করেছেন। ফলে তাদের জীবনের শেষ পরিণতি এক নয়। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ২
বর্গি এল খাজনা নিতে
মারল মানুষ কত।
পুড়ল শহর, পুড়ল শ্যামল
গ্রাম যে শত শত হানাদারের সঙ্গে জোরে
লড়ে মুক্তি সেনা,
তাদের কথা দেশের মানুষ কখনো ভুলবে না।”
ক. সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারীর নাম কী?
খ. “আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে।” উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন নিকটিকে নির্দেশ করে? আলোচনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের মুক্তিসেনা এবং সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজউদ্দৌলা একই সূত্রে গাঁথা”- মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর।
উত্তরঃ
ক. সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারীর নাম মোহাম্মদি বেগ।
খ. নবাবের বিরুদ্ধে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে উপস্থিত সবার উদ্দেশে ক্লাইভ প্রশ্নোত্ত উত্তিটি করেছেন।
মিরনের প্রাসাদে মিরজাফর, রায়দুর্লভ, রাজবাভসহ সবাই মিলে ক্লাইভের সঙ্গে নবাবের বিরুদ্ধে গোপন বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে তাদের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ছিল বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত অধ্যায়। এ কারণে ক্লাইভ বলেছিলেন, আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে।
গ. উদ্দীপকটি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ইংরেজদের শোষণ- অত্যাচারের দিকটিকে নির্দেশ করে। • ক্ষমতার লোভ আর অর্থের লোভে মানুষ যখন উন্মত্ত হয়ে ওঠে তখন মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে। নিজের স্বার্থে সে দুর্বলের ওপর জুলুম-অত্যাচার করে। অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করতেও পিছপা হয় না
‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে ইংরেজরা এদেশের মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার শুরু করে। নাটকে দেখা যায়, ইংরেজ কুঠিয়ালরা লবণ বিক্রি না করার অপরাধে এক দরিদ্র প্রজার ওপর নির্মম অত্যাচার করে। ইংরেজরা তার ঘরবাড়ি জ্বালিবো। দেয়। এমনকি তার গর্ভবতী স্ত্রীকে নির্যাতন করে। ইংরেজদের সীমাহীন অত্যাচারে দরিদ্র প্রজাদের দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। উদ্দীপকের কবিতাংশেও হানাদারদের নির্যাতনের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। তারা খাজনা আদায়ের নামে মানুষ হত্যা করে। পুড়িয়ে দেয় শত শত সবুজ গ্রাম ও শহর। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি “সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ইংজেদের নির্মম অত্যাচারের দিকটিকে নির্দেশ করে
ঘ. “উদ্দীপকের মুক্তিসেনা এবং সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজউদ্দৌলা একই সূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
যুগে যুগে বাংলা মায়ের বুক আশায়, নির্ভরতায় ভরিয়ে দিয়েছেন এদেশের বীর সন্তানেরা। তাঁরা কখনই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তাঁরাই এ জাতির গর্ব আর অহংকারের প্রতীক।
উদ্দীপকের কবিতাংশে হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুক্তিসেনাদের প্রতিরোধের কথা বলা হয়েছে। হানাদারেরা এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার শুরু করলে মুক্তিসেনারা নিজেদের জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করেন। দেশের জন্য তাদের আত্মত্যাগের কথা এদেশের মানুষ কখনই ভুলবে না। ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও ইংরেজদের অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছেন। নিজের দেশকে শত্রুমুক্ত করতে বীরদর্পে এগিয়ে গেছেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন।
‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা দেশ ও দেশের মানুষকে ইংরেজদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে বীরদর্পে লড়াই করেছেন। দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। তাঁর এই অবদান দেশের মানুষ কখনই ভুলবে না। উদ্দীপকের মুক্তিসেনারাও দেশের মানুষকে হানাদারদের অত্যাচার থেকে মুক্ত করতে লড়াই করেছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ দেশের মানুষ কখনই ভুলবে না। এই দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্দীপকের মুক্তিসেনা এবং “সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজউদ্দৌলা একই সূত্রে গাঁথা। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ৩
সিংহজানী পরগনার এক প্রতাপশালী জমিদারের নাম নারায়ণ রায়। প্রজাবাৎসল্য তার চরিত্রের অন্যতম দিক।। প্রজাদের সুখের জন্য তিনি দিঘি খনন, রাস্তাঘাট নির্মাণ, কলেজ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, খাদ্যাতার মোকাবেলায় গালা নানা রকম জনহিতকর কর্মকান্ড পরিচালনা করে জমিদারির অন্যতম সদস্য ছিলেন একমাত্র ভগ্নিপতি সদর সমাদার। তিনি তাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন এবং বিশ্বাস করতেন। এই বিশ্বাসের সুযোগে সমর সমাদার চরিতার্থে বাস্ত থাকত। তার অনেকবার ধরা পে জমিদার ঔদার্যবশত তাকে ক্ষমা করে দিতেন। এক বছর না পরিশোধের জন্য সমরকে দায়িত্ব দিলে সে সমস্ত অর্থ নিয়ে আত্মগোপন করে। সূর্যাস্ত আইনে জমিদারির পতন ঘটে।
ক. উমিচাদ কোথা থেকে বাংলাদেশে এসেছে?
খ. “আমার শেষ যুদ্ধ পলাশিতেই। ”- কেন?
গ. উদ্দীপকের সমর সমাদ্দার কীভাবে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের মিরজাফরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ঘ. উদ্দীপকের প্রজাবৎসল সিংহ নারায়ণ রায় যে কারণে জমিদারি হারিয়েছেন একই কারণে সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বাংলার স্বাধীনতা-সূর্য অস্ত যায়। উদ্দীপকে সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আলোকে উক্তিটি যাচাই কর।
উত্তরঃ
ক. উমিচাদ লাহোর থেকে বাংলাদেশে এসেছে।
খ. “আমার শেষ যুদ্ধ পলাশিতেই।”- উক্তিটি মোহনলাল পলাশির যুদ্ধে পরাজয়ের পর পুনরায় যুদ্ধে যাওয়ার সময় নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে করেছিলেন।
মিরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে পলাশিতে সিরাজের শিবিরে একের পর এক সেনাপতির মৃত্যু সংবাদ আসতে থাকে। পলাশিতে নবাবের পরাজয় হয়েছে, সেনাপতি মোহনলাল। খবর নিয়ে আসেন। মোহনলাল নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজয়ের গ্লানি এবং আত্মাভিমান ভুলে অবিলম্বে রাজধানীতে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। নবাবের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের শেষ যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে প্রতিশোধপরায়ণ সাহসী বীর মোহনলাল নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যান। আর তখনই মোহনলাল নবাবের উদ্দেশে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছিলেন।
গ. বিশ্বাসঘাতকতার দিক থেকে উদ্দীপকের সমস ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের মিরজাফরের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
স্বার্থপর, নীচ, হীন লোকদের কাছে মানুষের বিশ্বাসের চে আত্মস্বার্থই বড়। তারা নিজ স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছুই ভাবতে পারে না। নিজেদের জন্য তারা সবকিছু করতে পারে।
উদ্দীপকের সমর সমান্দার মিরজাফরের মতোই বিশ্বাস জমিদার সিংহ নারায়ণ রায়ের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে সে আত্মস্বার্থ চরিতার্থ করেছে। তার হীন কৃতকর্ম অনেকবার পড়লেও জমিদার উদার্যবশত তাকে ক্ষমা করে দেন। খাজনার টাকা নিয়ে সে আত্মগোপন করলে সূর্যাস্ত আইনে জমিদারির পতন ঘটে। ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের মিরজাফর নবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার নিয়ে গোপনে ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলার মসনদ দখল করে। সে নিজের স্বার্থের জন্য বিদেশিদের কোষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়েছে। আর এদিক থেকেই উদ্দীপকের সমর সমাদ্দার সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের মিরজাফরের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. “উদ্দীপকের প্রজাবৎসল সিংহ নারায়ণ রায় যে কারণে জমিদারি হারিয়েছেন একই কারণে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে বাংলার স্বাধীনতা-সূর্য অস্ত যায়।”- উক্তিটি যথার্থ।
আপনজনদের বিশ্বাসঘাতকতায় জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। আপনজনদের হীন ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার কারণে মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। অনেক সময় এমন বিশ্বাসঘাতকতার কারণে হারিয়ে যায় মানুষের প্রিয় স্বাধীনতা।
উদ্দীপকের প্রজাবৎসল সিংহ নারায়ণ রায় জমিদারি হারিয়েছেন একমাত্র ভগ্নিপতি বিশ্বাসঘাতকতায়য়। জমিদার তাকে বিশ্বাস করতেন ও স্নেহ করতেন। ওই বিশ্বাসের সুযোগে সে আত্মস্বার্থ চরিতার্থ করে; হীন কৃতকর্মের জন্য ধরা পড়লেও জমিদার ঔদার্যবশত তাকে ক্ষমা করে নেন। ওই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে সমর সমাদার খাজনার সমস্ত অর্থ নিয়ে আত্মগোপন করে। তার বিশ্বাসঘাতকতায় সূর্যাস্ত আইনে জমিদারির পতন ঘটে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের নবাব সিরাজদ্দৌলাও আত্মীয়- পরিজনদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে তাঁর সিংহাসন হারান। বিশ্বাসঘাতকেরা আপন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। মিরজাফরের বিশ্বাসঘাকতার কারণে পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় হয়, সেই সঙ্গে হারিয়ে যায় বাংলার স্বাধীনতা।
উদ্দীপকের প্রজাবৎসল সিংহ নারায়ণ রায় ভগ্নিপতি সমর সমাদ্দারের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে জমিদারি হারান। “সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকেও দেখা যায়, নবাবের প্রধান সেনাপতি মিরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় পলাশির যুদ্ধে ইংরেজদের বিরুদ্ধে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতা-সূর্য অস্ত যায়। তাই উদ্দীপক ও ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আলোকে বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের আরো সৃজনশীল
প্রিয় বন্ধুরা উপরে তোমাদের জন্য ৩ টি সৃজনশীল প্রশ্ন এবং উত্তর দেওয়া হয়েছে। আর সেই আলোকে নিচে আরো কয়েকটি সৃজনশীল দেওয়া হলো উত্তর ছাড়া। সেইগুলো তোমরা উপরের সৃজনশীল এবং পাঠ্য বইয়ের আলোকে সলভ করার চেষ্টা করবে।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ৪
রফিক সাহেব নাম পরিচয়হীন এক অনাথ বালককে আশ্রয় দিয়েছিলেন বিশ বছর আগে। নাম রেখেছিলেন সজল। অকৃত্রিম ভালোবাসা ও আদর-যত্নে রফিক সাহেবের সন্তান হিসেবেই সে বড় হয়। কিন্তু, ন্যূনতম মানবিক মূল্যবোধের সৌরভ তার মধ্যে সৃষ্টি হয়নি। মনের দিক থেকে সে এতই কদর্য ও সংকীর্ণ যে, রফিক সাহেবের বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে যেতে চায় সে। এলাকায় রফিক সাহেবের যশ-খ্যাতি ও সুনামের যারা প্রতিপক্ষ, তাদের দ্বারা সজল প্রতিনিয়ত প্ররোচিত হয়। সে তার আশ্রয়দাতার সম্পত্তি হস্তগত করার জন্য সুযোগ খোজে এবং একদিন সে অস্ত্রের মুখে সমস্ত সম্পত্তি তার নামে লিখে দিতে রফিক সাহেবকে বাধ্য করে এবং পরে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
ক. “চারিদিকে শুধু অবিশ্বাস আর গড়যন্ত্র – উক্তিটি কার?
গ. “ভীরু প্রতারকের দল চিরকালই পালায়। ” এর তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও ।
গ. উদ্দীপকের। সজলের আচরণ সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন চরিত্রের সঙ্গে তুলনীয়? মুক্তি দেখাও।
ঘ. উদ্দীপকের রফিক সাহেব ও সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজের পরিণতি এক হলেও প্রেক্ষাপট ভিন্ন আলোচনা কর।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ৫
মাত্র সতেরো জন সৈন্য নিয়ে বখতিয়ার খলজি সুদূর তুরস্ক থেকে এসে বাংলার সিংহাসন দখল করে নিয়েছিল। সামান্য কয়জন ছদ্মবেশী বণিক যুদ্ধে জয়লাভ করেছিল তাদের অসামান্য সাহস, শৃঙ্খলা ও চাতুর্য দিয়ে। পক্ষান্তরে লক্ষ্মণসেনের রাজপ্রাসাদ ছিল নানা বিশৃঙ্খলায় পরিপূর্ণ ও অরক্ষিত। তার বিশাল বাহিনী যুদ্ধ না করে পালিয়ে গেল। লক্ষ্মণসেনও রাজ্য ত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। মূলত সেদিন যুদ্ধ হয়নি, হয়েছে যুদ্ধের তিক্ত অভিজ্ঞতা।
ক. ঐতিহাসিক পলাশি কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
খ. ট্র্যাজেডি হিসেবে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ঘটনা কোন কোন ক্ষেত্রে তুলনীয়?
ঘ. “মূলত সেদিন যুদ্ধ হয়নি, হয়েছে যুদ্ধের তিক্ত অভিজ্ঞতা।” এই উক্তি ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য- কথাটির তাৎপর্য মূল্যায়ন কর।
আরো পড়ুনঃ বঙ্গবাণী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ৬
ছেলারচর বিষখালি নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চর। পলিতে উর্বর চরের ভূমি। এলাকার বৈলাম মল্লিক চরের ভূমি দখলের লোভ সামলাতে পারল না। কিন্তু এলাকার সমাজসেবক জমিদারের বিরুদ্ধে লড়বে কে? বৈলাম গোপনে সখ্য করে জমিদারের দূর সম্পর্কের জ্ঞাতিভাই পিলু সিকদারের সাথে। তার সহায়তায় বৈলাম মল্লিক এবং তার চাটুকার বাহিনী চর দখল করে। এখন বেলামের নতুন চরের দায়িত্ব নেওয়া ও নেতৃত্বের দাপট দেখানোর সময়। সে পিলু সিকদারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছাড়া ছৈলারচরের দায়িত্ব গ্রহণে অনীহা দেখায়। এভাবে নদীর বুকে। জেগে ওঠা নতুন চরটি জমিদারের নেতৃত্ব হারায়।
ক. ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে শেষ সংলাপ কার? খ. “ব্রিটিশ সিংহ ভয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন, এ বড় লজ্জার কথা” – ব্যাখ্যা কর।
উদ্দীপকে বর্ণিত বৈলাম মল্লিকের সাথে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ‘মিরজাফর’ চরিত্রের তুলনা কর ।
ঘ. “উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনা ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের করুণ পরিণতির আংশিক ছায়াচিত্র।” – মতামত বিশ্লেষণ কর।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ৭
শোনো, একদিন এই দেশটাতে দানবেরা দেয় হানা
শকুনেরা মেলে ডানা
পুড়ে ছারখার মাঠের শস্য
মানুষের আস্তানা
ক. নবাবের গোলন্দাজ বাহিনী কোন খাল পেরিয়ে ছুটে আসছে?
খ. “ফিরে এসেছি রাজধানীতে স্বাধীনতা বজায় রাখবার শেষ চেষ্টা করব বলে।” – উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের দানবেরা’, ‘শকুনেরা “’সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কাদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি “সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের সাথে কতটুকু যোগসূত্র স্থাপন করেছে?” – বিশ্লেষণ কর।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ৮
‘বিসর্জন’ নাটকে সন্তানতুল্য ছাগশিশুকে দেবীর মন্দিরে বলি দেওয়ার কারণে শোকার্ত ভিখারি অপর্ণা। সে রাজা গোবিন্ধ মাণিক্যের কাছে বিচারপ্রার্থী হয়। সন্তানহারা ভিখারির দুঃখ রাজচিত্তকে আহত করে। রাজা রাজ্যে পশুবলি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন কিন্তু তাঁর এ আদেশ মেনে নিতে পারে না রাজ-পুরোহিত রঘুপতি। তিনি রাজার অনুজ নক্ষত্র রায়কে রাজালোভে ব করে রাজাকে হত্যা করতে রাজি করান।
ক. নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দি হন?
খ. “ভীরু প্রতারকের দল চিরকালই পালায়।” – ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের নক্ষত্র রায়ের সঙ্গে “সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ঘসেটি বেগমের সাদৃশ্য দেখাও
ঘ. “উদ্দীপকে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের বিষয়বস্তুর আংশিক প্রতিফলন ঘটেছে।”- তোমার মতামত দাও।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ৯
কেউ তো জানে না প্রাণের আকুতি বারেবারে সে কী চায়
স্বার্থের টানে প্রিয়জন কেন দূরে সরে চলে যায়
ধরণির বুকে পাশাপাশি তবু কেউ বুঝি কারো নয়
ক. ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের তৃতীয় অঙ্কের দৃশ্য সংখ্যা কত?
খ. “আসামির সে অধিকার থাকে নাকি?” – কে, কাকে, কখন বলেছিল? বর্ণনা কর।
গ. “উদ্দীপকের দ্বিতীয় লাইনটি যেন ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ঘসেটি বেগমকে ইঙ্গিত করছে।”- মন্তব্যটি বুঝিয়ে লেখ।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের ঘৃণিত ও নিন্দিত অধ্যায়টি বিশ্লেষণ কর।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল – ১০
ইতিহাস পথ নিল কুটিল পদ্মার বাঁকে বাঁকে, বারুদে জোয়ার লাগে, পীতাঙ্কা গোঁয়ার বান ডাকে – এশিয়ার সূর্য ওঠে দোর্দণ্ড প্রতাপ । আর্তনাদ করে নিতে অগণিত প্রজাপুঞ্জ যে ক্লীব পালাবে তার মুক্তি নেই আর। বিশ্বাসঘাতক প্রভু নিয়েছে বিদায়;
ক. সিরাজউদ্দৌলার মায়ের নাম কী?
খ. “আমার নালিশ আজ আমার বিরুদ্ধে।”- এই উক্তির তাৎপর্য কী?
গ. উদ্দীপকের বক্তব্যের সাথে সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের পটভূমিগত সাদৃশ্য কতটুকু? বিশ্লেষণ কর।
ঘ. “বিশ্বাসঘাতক প্রভু নিয়েছে বিদায়।”- এ উক্তি “সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কাহিনির আলোকে কতটা সত্য? মূল্যায়ন কর ।
শেষ কথা
তো প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই পোস্ট এ আপনারা জানলেন কয়েকটি সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর এবং এরই সাথে কিছু এক্সট্রা সৃজনশীল প্রশ্ন। আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের কাছে অনেক টা ভালো লেগেছে।
ভালো লেগে থাকলে কিন্তু অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আমাদের। আর এরকম সব পোস্ট পেতে প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকুন আমাদের এই ওয়েব সাইট টি তে। আবার দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্ট এ। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেয।