স্কুল জীবনের স্মৃতি
শিক্ষার্থীদের জন্য স্মৃতি চারন মূলক একটি রচনা
সূচিপত্র
ভূমিকা
সবার জীবনে কিছুনা কিছু স্মৃতিচারন মূলক ঘটনা থাকে।তেমনি আমার জীবনে ও কিছু স্মৃতিচারন মূলক ঘটনা রয়েছে যা কখোনোই ভোলার নয় আর সেটি হচ্ছে স্কুল জীবনের স্মৃতি। শৈশবের সে স্কুল জীবনের কথা মনে করলে ইচ্ছে করে আবার সে ডুব দেয় সূদূর অতীত স্কুল জীবনে যদি ও কখনোই আর তা সম্ভব নয়। স্কুলে ঝগরা ঝাটি,খেলাধুলা স্যারদের হাতের পিটুনি,সবকিছুই এখন স্মৃতির পাতায়।চাইলে ও আর ফেরা সম্ভব না। সেই স্মৃতিকে মনে গেথে সামনে চলতে হচ্ছে আমাদের সকলকে যে দিন চলে যায় সেদিন আর ফিরে আসেনা, সেটি স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে রয়ে যায়। আজ স্কুল জীবনের কিছু কথা নিয়ে আলোচনা করব। নিচে তারকিছু বর্ননা দেওয়া হলো
স্কুলের বৈশিষ্ট্য
গ্রামের খুব সুনাম ধন্য একটা স্কুলে পড়াশুনা করি স্কুলটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি রয়েছে খ্যাতিমান কিছু পুরস্কার।প্রথমদিকে স্কুলটি দেখতে ভাঙ্গা দুচালা একটি ঘরের মত হলো কালের বিবর্তনে ও কুছু খ্যাতিমান মানুষের সহযোগিতায় স্কুলটি খুব আকর্ষনিয় হয়ে ওঠে।বর্তমানে এর খুব না দাম। আগেকার বেসরকারি স্কুলটি এখন সরকারের আওতায় চলে গেছে।স্কুলটির খুব উন্নত হয়ছে। স্কুল টি যেমন গুনে ভরা তেমনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ও ভরা স্কুলটির একপাশে রয়েছে আড়িয়ালখা নদী স্কুল মাঠের আরেকপাশে রয়েছে শহীদমিনার ও তার পাশে একটি বকুলফুলের গাছ আর এ গাছটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কে আরো বাড়িয়ে তোলেছে।স্কুলের বারান্দার পাশে রয়েছে ফুলের বাগান বিভিন্ন ঋতু বিভিন্ন ফুল ফুটে তার সৌন্দর্য কে দ্বিগুন করে তোলে।স্কুলটির এই সৌন্দর্য প্রত্যেক মানুষ কে মুগ্ধ করে।অনেক দূর থেকে ও সৌন্দর্যের মূহে পড়ে স্কুলটি প্রদর্শন করতে আসে। স্কুল শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের বাড়ি পৌছানোর জন্য খুব ছুটোছুটি করত। মাঠে অনেক ছেলে মেয়ে প্রায় সময় ই ছুটির পর খেলা ধুলা করত। আমরা অনেক বন্ধুরা মিলে মাঠ প্রাঙ্গনে যে বকুল গাছটি ছিল তার ছায়ায় বসে গল্প করতাম, শুধু আমরা না স্কুলে এমন আরো অনেক শিক্ষার্থী ছিল যারা মাঠে বসে আমাদের মতই আড্ডা দিত। স্কুলের একটি বিশেষ কমিটি ছিলেন তিনি ছাত্রিদের সাথে খুব বন্ধুসুলভ ভাবে মিলামিশা করতেন। তার কাছে স্কুলের অনেক অতীত ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়। তিনি স্কুলটাকে অনেক ভালোবাসতেন সেটা আমাদের কাছে শেয়ার করতেন। আর আজকে আমরা ও তার মত স্কুল থেকে অনেক দূরে। শুঊু মিছ করা যায় সে দিন গুলো আর কাছে পাওয়া যায় না।
শিক্ষক
স্কুলের প্রত্যেকটি শিক্ষক ক্লসের পড়াশুনার ক্ষেত্রে খুব কড়া আর তার পিছনের অবদান রয়েছে স্কুলের অধ্যক্ষের। তিনি খুব কড়া চাপ সৃষ্টি করে শিক্ষদের উপর পড়াশুনার ক্ষেত্রে। স্কুলের এমন কিছু শিক্ষক আছে তারা ছাত্রদের সাথে খুব বন্ধু সুলভ আচরন করে। মাঝে মাঝে ছাত্রদের সাথে তারা ও মাঠে খেলাধুলায় অংশগ্রহন করে। ছাত্রদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে আমাদের সাথে বন্ধু সুলভ আচরন করতেন ক্লাসের ইংলিস টিচার। বয়স খুব অল্প তাই আমাদের সাথে ওনি ও খেলাধুলা পছন্দ করতেন ও অংশগ্রহন করতেন। তার কাছ থেকে অনেকসময় ই অনেক কিছুর সাজেশন পাওয়া যেত। স্কুলের আইসিটি টিচার ছিলেন খুব মজার মানুষ ক্লাসের পড়ার ফাকে খুব দুষ্টুমি করতেন ছাত্রিদের সাথে। খুব মজার সাথে প্রত্যেকটা অধ্যায় তিনি পাঠ করাতেন। আমার জানা মতে এমন একটি ক্লাস নেই যে আমি তার ক্লাস মিস করেছি।যত সমস্যায় থাকত ওর ক্লাসে অংশগ্রহন করতাম। তার এ মজার ক্লাসের কথা আজ ওমনে পরে। এমন ভাবে যদি সবা শিক্ষক ক্লাস করায় তাহলে দুর্বল স্টুডেন্ট গুলো ও কিছ বুঝতে পারবে বলে আশা করা যায়। অপরপক্ষে বিজ্ঞান শিক্ষক ক্লাসের খুব কড়া ছিলেন তিনি স্টুডেন্টরা এদিক সেদিক করলে খুব পিটুনি দিতেন।
তার পিটুনির ভয়ে অনেকে ক্লাস ফাকি দিত। বিজ্ঞান বিষয়টা ও ছিল খুব হার্ড একটা বিষয় তার সাথে আবার কড়া একটা শিক্ষক সব মিলিয়ে গোলমাল লেগে যেত এ বিষয়ে শিক্ষক ক্লাসে আসা মাত্রই সবাই খুব চুপ চাপ হয়ে যেত ওনি ক্লাস থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে সবায় ওনাকে নিয়ে খুব আলেচনা করতাম। যেদিন হোম ওয়ার্ক বা পড়া শিখা হয়নি সেদিন খুব ভয়ে ভয়ে কাটত আর মাঝে মাঝে ক্লাস ফাকি ও দিতাম এমনকি ওনি এদিক সেদিক ঘুড়ে তাকালে ও এর জন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের দাড় করিয়ে রাখতেন আর অন্যান্য অপরাধের জন্য বেতের ঘা দিতেন।
তার এ কঠোরতা অনেক শিক্ষার্থীকে বিরক্ত করত। সব স্টুডেন্ট রায় তার শিক্ষকদের কাছ থেকে আদর ও স্নেহ চায়। ওকে খুব ভয় পেত সবায়। তাই বলা যায় ইংলিস ও আাইসিটি টিচার আমাূের কাছে বেষ্ট ছিল তাদের আচরনই শ্রেষ্ঠ ছিল আজ ও তাদের এই বন্ধুসুলভ আচরনের কথা মনে পরে।মাঝে মাঝে স্কুলে যাওয়া পরলে ও সকল শিক্ষকদের খুজে পাওয়া যায় অনেকেই স্কুল থেকে অবসর নিয়েছে অনেকেই বিদায় নিয়েছে। স্কুল জীবন থাকা কালিন যে আনন্দটা উপভোগ করতাম এখন আর সেটা করা যায় না।
খেলাধুলা
বছরে একবার খেলাধুলা হত খুব ঝাকঝমক। অনেক দূর দূরান্তের মানুষ এসে খেলাধুলায় অংশগ্রহন করত। অতিথি হিসাবে থাকত বিশেষ কিছু মানুষ তাদের মধ্যে ছিল এলাকার চ্যায়ারম্যান, ও এম্পি,, এবং স্কুলের অন্যান্য সভাপতিরা। বিভিন্ন ধরনের খেলা হত। যেমন,দৌড় প্রতিযোগিতা, হাড়ি ভাঙা,জল থেকে ফল তোলা, বর্ষা নিক্ষপ আরো অনেক প্রকার খেলা থাকত, স্কুলের শিক্ষকরা ও খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় নাম লিখত, আর খেলাধুলার পরিচালনা করতেন ক্লাসের শারীরিক শিক্ষক ছার।
ওনি খুব নিক্ষুত ভাবে এই খেলার পরিচালনা করেন। তবে একটা দুঃখের বিষয় হলো ৫ বছর পড়াশুনায় বার্ষীক ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করতে পারিনি। পারিবারিক কিছু সমস্যার কারনে।অংশগ্রহন করতে না পারলে খেলাধুলা খুব বেশি প্রদর্শন করা হতো। কোনো খেলা দেখা আমার মিস হতো না খুব উৎসাহ নিয়ে খেলাধুলা প্রদর্শন করতাম।
খেলাধুলোর মধ্য স্কুলের অন্যতম একটা জনপ্রিয় খেলা ছিল ফুটবল। মাঝে মাঝে খেলা দেখার জন্য অনেক ক্লাস মিস দিতাম। ফুটবল খেলার দল হিসাবে থাকত ছোট দল vs বড় দল আবার আরো দল থাকত, আমাদের স্কুল vs অন্যান্য স্কুল।এসব দল ভিত্তিক খেলা দেখতে খুব ভালো লাগে। বার্ষীক ভাবে ফুটবলটা তেমন আয়োজন ভাবে খেলাহতো না এতে শুধু স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরায় অংশগ্রহন করত সাথে থাকত অন্যান্য স্কুলের শিক্ষকরা তবে খেলাধুলা ও পড়াশুনার ক্ষেত্রে আমাদের স্কুলটায় আগে ছিল। পাশের সব এলাকার মানুষ ও এই স্কুলের সুনাম করতো। আমাদের কাছে সেটি গর্ভবোধ বিষয় ছিল।
লেখপড়া ও পরীক্ষা
বছরে দু বার পরীক্ষা হতো অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক অষ্টম শ্রেনী ও দশম শ্রেণী স্টুডেন্টদের জন্য অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা খুবই বিপজ্জনক।কান এ পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে না পারলে বার্ষীক পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয় তাকে। আমরা সকল বন্ধুরা একসাথে একই ভাবে করে আসছি। কিন্তু মাঝে লেখাপড়া কুছুটা কমিয়ে ফেলায় আমার কিছু বন্ধুরা দশম শ্রেণীতে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় উর্ত্তীন হতে পারে।
এঘটনাটি ছিল মার্মান্তক ও দুঃখজনক ঘটনা।তারপর থেকে সবাই আলাদা।কিছু বন্ধুরা আবার পুনরায় সেই ক্লাসেয় থেকে গেছে আবার কেও লজ্জায় লেখাপরা বাদ দিয়ে দিয়েছে। আমরা কয়েকজন মাত্র পরীক্ষা দিতে পেরেছিলাম। তাদের জন্য খুব কষ্ট লেগেছিল। তার জন্য প্রিন্সিপালের কাছে খুব আকুতি মিনতি করা হয়েছিল তিনি একটায় কথা বলেছিলেন স্কুলের নিয়মানুসারে স্কুল চলবে তোমরা ভালোকরে পড়াশুনা করোনায় তার জন্য তোমরায় দায়ী আগেয় তোমাদের ওয়ার্নিং দেওয়া হয়েছিল তোমরা সতর্ক হওনি।
তিনি তার নিয়ম থেকে এক বিন্দু ও সরেন নি। আর আজ ও এই নিয়ম প্রচলিত আছে। স্কুলের নতুন নিয়ম হিসাবে রয়েছে, স্কুলে নতুন ভর্তি হওয়ার আগে যে শিক্ষার্থীরায় ভর্তী হতে ইচ্ছুক বছরের শুরুতেই তাদের আবার পরীক্ষা নেওয়া হয়। যাকে ইন্টারভিউ ও নলা যায়। স্কুল দিন দিন উন্নতের দিকেই পা বাড়াচ্ছে।পরাশুনার উপর ও খুব চাপ দেওয়া হচ্ছে।
বিদায়বেলা
স্কুল থেকে বিদায় এর সময় খুবই কষ্ট ও যন্ত্রনাদায়ক একটা সময় প্রত্যেক ক্লাস এর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাচ বছরের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চাওয়া একটি কষ্ট দায়ক দিন। তবু ও বিদায় নেওয়া লাগে। এটায় যুগ যুগ ধরে চলে আসছে নিয়ামনুসারে আর আমাদের কে ও বিদায় নিতে হয়েছে। ওইদিন স্কুলে খুব বড় একটা অনুষ্ঠান হয়। প্রিন্সিপাল ও এলাকার এম্পি সাহেব অুনাষ্ঠানের প্রধাব ব্যাক্তি ওনি স্পষ্ট ভাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী মঙ্গল কামনা ভাষন দিয়েছেন।
পাশাপাশি এম্পিসাহেব ও ছিলেন ওনি ও খুব হ্রদয় গম্ভীর ভাষন দিয়েছেন অনুষ্ঠান শেষে খাবারের আয়োজন ও একটি করে স্কুল এর ম্যাগাজিন দেওয়া হয় প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের। আর এ ম্যাগাজিন এখনো আমার কছে অমলিন হয়ে রয়েছে মাঝে মাঝপ ফাক পেলে ম্যাগাজিন পরে আনন্দিত হয়।এই ম্যাগাজিনে ক্লাসের অনেকেই গল্প লিখেছে স্কুল কে ঘিরে কে কবিতা লিখেছে কেও খুব সুন্দর বক্তব্য রেখছে। ইংরেজিতে মেধা শিক্ষার্থীরা ইংরেজি কবিতা ও লিখেছে। এতে স্কুল ও কলেজের সকল শিক্ষকদের ছবি সহ ফোন নাম্বার দেওয়া হয়েছিল। এবং বিদায় সকল শিক্ষার্থীদের ছবি দেওয়া হয়েছিল সাথে স্কুল সহায়ক দপ্তরিদের ও পরিচয় ছিল।
উপসংহার
সময় বহমান সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। স্কুল লাইফের গন্ডি পেরিয়ে এসেছি ঠিকই, স্কুল লাইফের মায়া ছাড়তে পারিনি। ইচ্ছে করে আবার চলে যায় সেই অতীতে। স্কুলে যাবার প্রথমে একবার কেধেছিলাম আর দ্বীতীয়বার কাধলাম বিদায়বেলা। দুটোর মধ্যেই খুব পার্থক্য। স্কুল জীবনে সেই মজাদার সময় সবার জীবনকেই উল্লাসিত করে তবু অতীতকে ভুলে আমাদের সামনে এগোনোর জন্য বর্তমানকে মেনে চলতে হয়।