তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুমের অর্থ কি ?

তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুমের অর্থ কি

 

সুপ্রিয় পাঠক । আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ । আশা করছি সকলে ভালো আছেন । এবং ঈদ উদযাপনের সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন । আপনাদের ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক ব্যক্তি জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত । আলোকিত হোক এই দেশ । ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হোক মুসলিম উম্মাহ ।

তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুমের অর্থ কি

আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন ঈদের আগে-পরে ঈদ মোবারক বলার ধুম পড়ে যায় । অনলাইন অফলাইন ঈদ মোবারক এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে । কিন্তু এটি বলার চেয়ে হাদীসে বর্ণিত আরো চমৎকার একটি দোয়া রয়েছে । আর সেটিই হলো তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম ।‌ এই দোয়াটির আরবী , বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং ঈদ শুভেচ্ছা সংক্রান্ত আরো দু একটি তথ্য উল্লেখ করা হলো । উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।

 

আরবীতে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়

 

تقبل الله منا ومنكم

বাংলা উচ্চারণ: তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম

 

তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুমের অর্থ 

আল্লাহ তাআলা আমাদের এবং আপনাদের ভালো কাজগুলো কবুল করুন ।

 

ঈদের শুভেচ্ছা বাক্য

 

ঈদুল আযহা হোক কিংবা ঈদুল ফিতর হোক এভাবে সংক্ষেপে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো যায় ।

১. عيد مبارك ( ঈদ মোবারক)

২. عيد سعيد ( ঈদুন সাঈদুন)

 

তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুমের হাদীস

 

হযরত ওয়াসিলা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ঈদের দিন সাক্ষাৎ করলাম । আমি বললাম, তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা । তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বললেন তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা । ( সুনানে বায়হাকি, হাদীস ৩/৪৪৬)

 

ঈদের দিনে সালাম

 

ঈদের দিনে সালাম করা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । অনেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সালাম দিতে ভুলে যায় । অথচ সালামের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলা পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি করে দেন । হাদীসে এসেছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

পড়ুন – Ayatul kursi bangla 

ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না । আর একে অন্যকে ভালো না বাসলে ঈমানদার হতে পারবে না । আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজ শিখিয়ে দেবো যা করলে তোমরা পরস্পরে ভালবাসতে পারবে । (সে কাজটি হল) তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের প্রচলন করো । সহীহ মুসলিম, হাদীস ১/৪৭

 

 

ঈদের দিনে মুসাফাহা

 

ঈদের দিন ছাড়াও যে কোন দিন পারস্পরিক সাক্ষাতে হাত মেলানো বা মুসাফাহা করার অনেক ফজিলত রয়েছে । এই যেমন একটি হাদীস শুনুন,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যদি দুজন মুসলিম সাক্ষাৎ করে পরস্পর মুসাফাহা করে ,তাহলে তারা ওই স্থান থেকে পৃথক হওয়ার আগেই তাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয় ‌।

(জামে তিরমিজি, হাদীস ৫/৭৪, ইবনে মাজাহ, হাদীস ২/১২২০)

 

মুসাফাহা করার নিয়ম

 

অনেকে হাদীস না বুঝে একহাতে মুসাফাহা করার কথা বলেন । কিন্তু তাদের ওই দাবিটি সঠিক নয় । মুসাফাহা হল দুই হাতে করা সুন্নাত। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন আমার হাতটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর দুই হাতের মধ্যে ছিল । ( সহীহ বুখারী, হাদীস ৫/২৩১১)

আর মুসাফাহা করার সময় এ দোয়া পাঠ করতে হয় ।

ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়া লাকুম। মুসাফাহার পর বুকে হাত লাগানোর কোন বিধান নেই । অতএব এটা পরিত্যাজ্য ।

 

ঈদের দিনে কোলাকুলি

 

মুআনাকা বা কোলাকুলি মুসলিম সংস্কৃতির অংশ । কোন ব্যক্তির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হলে সালাম ,মুসাফাহা এবং মোআনাকা করা সুন্নাত । এ আমল দৈনিক করা উচিত । সারা বছর এই আমল না করে শুধু ঈদের দিনের জন্য জমা করে রাখা কোনভাবেই ঠিক নয় । কোলাকুলির একটি হাদীস উল্লেখ করে এই আর্টিকেল শেষ করছি ।

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবীরা পরস্পর সাক্ষাৎ হলে হাত মেলাতে আর তারা সফর থেকে আগমন করলেও মুআনাকা করতেন । (তাবারানী, হাদীস ৩/২২ )

তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুমের অর্থ কি

শেষকথাঃ

তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুমের অর্থ কি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। এছাড়াও আজকের এই লেখা থেকে ঈদের দিনের কতিপয় সুন্নাত সমূহ জানতে পারলাম।