কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম। কৃমির জন্য কোন ঔষধটি ভালো?

কাশি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি দীর্ঘস্থায়ী হলে বড় ধরনের অসুস্থতার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে অথবা ধুলাবালি, ধোঁয়া ও দূষণের কারণে প্রাপ্তবয়স্কদের কাশির প্রবণতা বেড়ে যায়। কাশি সাধারণত দুই ধরনের হতে দেখা যায়—ভেজা কাশি (Wet Cough) এবং শুষ্ক কাশি (Dry Cough)। ভেজা কাশিতে কফ বের হয়, কিন্তু শুষ্ক কাশিতে কফ থাকে না, কেবল গলা চুলকায় ও টান লাগে। বাংলাদেশে বড়দের জন্য বিভিন্ন কাশির সিরাপ ও শুষ্ক কাশির ঔষধ পাওয়া যায়, যেগুলো চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করলে কার্যকর ফল পাওয়া যায়।

বড়দের কাশির জন্য জনপ্রিয় সিরাপের নাম বাংলাদেশে

বাংলাদেশে বাজারে বেশ কিছু কার্যকর কাশির সিরাপ পাওয়া যায়। এগুলো সাধারণত কাশি কমানো, গলার খুসখুসভাব দূর করা এবং শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। নিচে বড়দের জন্য ব্যবহৃত কিছু জনপ্রিয় সিরাপের নাম উল্লেখ করা হলো—

১. Tussin Syrup

  • গলা ব্যথা, খুসখুসে কাশি ও সর্দি উপশমে ব্যবহৃত হয়।

  • প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে ২–৩ বার খাওয়া যেতে পারে (চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী)।

২. Bromhexine Syrup

  • এটি একটি মিউকোলাইটিক সিরাপ, যা কফ নরম করে সহজে বের করতে সাহায্য করে।

  • ভেজা কাশি ও ঠান্ডাজনিত শ্বাসকষ্টে কার্যকর।

৩. Ambroxol Syrup (Mucosolvan)

  • গলায় জমে থাকা কফ পরিষ্কার করে।

  • দীর্ঘমেয়াদী কাশিতে ব্যবহৃত হয়।

৪. Phenergan Syrup

  • এটি কাশি কমানোর পাশাপাশি অ্যালার্জি থেকেও সুরক্ষা দেয়।

  • শ্বাসনালীতে সর্দি বা কফ জমলে উপকারী।

See also  ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি ট্যাবলেট এর নাম

৫. Benylin Syrup

  • শুকনো ও ভেজা দুই ধরনের কাশিতেই কার্যকর।

  • বিশেষ করে রাতে কাশি কমিয়ে ঘুমাতে সাহায্য করে।

শুষ্ক কাশির ঔষধের নাম

শুষ্ক কাশি সাধারণত গলার শুষ্কতা, অ্যালার্জি, ধুলাবালি বা ভাইরাসজনিত কারণে হয়। বাংলাদেশে শুষ্ক কাশি উপশমে নিচের ওষুধগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়—

১. Dextromethorphan Syrup

  • শুষ্ক কাশি কমানোর সবচেয়ে কার্যকর ঔষধ।

  • কাশি দমন করে এবং গলার চুলকানি কমায়।

২. Codeine-based Syrup (Codex, Codotuss)

  • শুষ্ক কাশি নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।

  • এটি প্রেসক্রিপশন ছাড়া ব্যবহার করা ঠিক নয়, কারণ এতে আসক্তির ঝুঁকি রয়েছে।

৩. Terbutaline Syrup

  • এটি শ্বাসনালী প্রসারিত করে কাশি কমাতে সাহায্য করে।

  • হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত কাশিতে কার্যকর।

৪. Hydrocodone Syrup (Prescription Required)

  • শুষ্ক কাশি দমন করার জন্য কার্যকর একটি শক্তিশালী ঔষধ।

  • অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করতে হবে।

কাশি অনুযায়ী সঠিক সিরাপ বাছাই করার উপায়

  • ভেজা কাশি হলে: Ambroxol, Bromhexine বা Tussin সিরাপ ব্যবহার করা যায়।

  • শুষ্ক কাশি হলে: Dextromethorphan বা Codeine সিরাপ কার্যকর।

  • অ্যালার্জিজনিত কাশি হলে: Phenergan বা অ্যান্টিহিস্টামিন সিরাপ ভালো কাজ করে।

  • শ্বাসকষ্টসহ কাশি হলে: Terbutaline সিরাপ ব্যবহার করা হয়।

প্রাকৃতিকভাবে কাশি কমানোর উপায়

  • আদা ও মধু মিশিয়ে খেলে শুষ্ক কাশিতে উপকার পাওয়া যায়।

  • লেবু ও মধুর গরম পানি গলার খুসখুস ভাব কমায়।

  • গরম পানির ভাপ নিলে শ্বাসনালী পরিষ্কার হয়।

  • পর্যাপ্ত পানি পান করলে গলার শুষ্কতা কমে যায়।

  • ধুলাবালি ও ধোঁয়া এড়িয়ে চলা উচিত।

কাশি সিরাপ ব্যবহারে সতর্কতা

  • ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া শক্তিশালী সিরাপ ব্যবহার করা উচিত নয়।

  • কোডিনযুক্ত সিরাপ আসক্তি তৈরি করতে পারে, তাই দীর্ঘদিন ব্যবহার করা ঠিক নয়।

  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনি-মুক্ত সিরাপ বেছে নিতে হবে।

  • শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য আলাদা মাত্রা প্রযোজ্য।

  • কাশি তিন সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

See also  বাচ্চাদের এলার্জির লক্ষণ ও এলার্জি দূর করার উপায়

বাংলাদেশে বড়দের কাশির জন্য বিভিন্ন সিরাপ ও শুষ্ক কাশির ঔষধ সহজলভ্য। তবে কাশি কতদিন ধরে আছে এবং কাশির ধরন অনুযায়ী ওষুধ নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি। মনে রাখতে হবে, যেকোনো কাশির সিরাপ বা ঔষধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করাই সর্বোত্তম। পাশাপাশি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেও কাশি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সুস্থ থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান এবং ধুলাবালি এড়িয়ে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment