৫ বছরের বাচ্চাদের পেটে ব্যথা হলে করণীয়

শিশুরা খুব সংবেদনশীল এবং তাদের শরীরের প্রতিটি পরিবর্তন দ্রুত প্রভাব ফেলতে পারে। ৫ বছরের বাচ্চাদের পেটে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এর পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। কখনও এটি সামান্য হজমের সমস্যা থেকে হয়, আবার কখনও গুরুতর রোগের লক্ষণও হতে পারে। তাই বাবা-মায়ের উচিত সতর্কভাবে বিষয়টি বোঝা এবং সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া।

অনেক সময় বাচ্চারা সঠিকভাবে তাদের ব্যথা বা অস্বস্তি প্রকাশ করতে পারে না। ফলে পেটে ব্যথা হলে তা কেবল কান্না, খাবার না খাওয়া বা খিটখিটে আচরণের মাধ্যমে বোঝা যায়। ছোটদের পেটের সমস্যা অবহেলা করলে তা ভবিষ্যতে বড় ধরনের অসুস্থতায় রূপ নিতে পারে। তাই লক্ষণ বুঝে প্রাথমিকভাবে ঘরোয়া যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

শিশুর পেটে ব্যথার কারণ বিভিন্ন রকম হতে পারে—হজমে সমস্যা, গ্যাস জমা, খাবারে অ্যালার্জি, কৃমি, সংক্রমণ কিংবা অ্যাপেন্ডিসাইটিস। প্রতিটি কারণ অনুযায়ী করণীয় ভিন্ন। সঠিক যত্ন, খাবারের নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচ্ছন্নতা শিশুর সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এখন আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব, ৫ বছরের বাচ্চাদের পেটে ব্যথা হলে কী করণীয়।

পেটে ব্যথার সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করা

পেটে ব্যথা হলে প্রথমেই বাবা-মায়ের উচিত কারণটি বোঝার চেষ্টা করা। হালকা ব্যথা অনেক সময় অতিরিক্ত চকলেট, জাঙ্ক ফুড বা তেল-ঝাল খাবার খাওয়ার কারণে হতে পারে। আবার কোষ্ঠকাঠিন্যও শিশুদের পেটে ব্যথার বড় কারণ। যদি বাচ্চার জ্বর, বমি, পাতলা পায়খানা বা অতিরিক্ত কান্না থাকে তবে এটি সংক্রমণ বা গুরুতর অসুখের লক্ষণ হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ঘরোয়া যত্ন ও প্রাথমিক চিকিৎসা

হালকা পেটে ব্যথার ক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু যত্ন কার্যকর হতে পারে। বাচ্চাকে পর্যাপ্ত পানি খাওয়ানো, হালকা গরম পানি পান করানো এবং সহজপাচ্য খাবার দেওয়া ভালো। যেমন—খিচুড়ি, স্যুপ, কলা, ডাবের পানি ইত্যাদি। পেটে গরম সেঁক দিলে অনেক সময় ব্যথা কমে যায়। তবে কোনো ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দেওয়া উচিত নয়, কারণ শিশুর বয়স অনুযায়ী ডোজ ও ওষুধের ধরন আলাদা হয়।

See also  গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিডিটির জন্য কার্যকর ওষুধ

ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার সময়

যদি পেটে ব্যথা দীর্ঘসময় ধরে থাকে বা এর সাথে জ্বর, বমি, রক্তযুক্ত পায়খানা, পেটে ফোলা, তীব্র কান্না ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করবেন এবং উপযুক্ত চিকিৎসা দেবেন। বিশেষ করে অ্যাপেন্ডিসাইটিস বা গুরুতর সংক্রমণ হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা জীবন রক্ষা করতে পারে।

৫ বছরের বাচ্চাদের পেটে ব্যথা সাধারণ মনে হলেও এর পেছনে গুরুতর কারণ থাকতে পারে। তাই অভিভাবকদের দায়িত্ব হলো শিশুদের শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য রাখা, সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া। যত্নশীল মনোভাব, সঠিক খাবার, পরিচ্ছন্নতা এবং সময়মতো চিকিৎসা আপনার শিশুকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে।

Leave a Comment